টঙ্গীতে ৫টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা, আহত ৪

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ২৪
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ৫৯

গাজীপুরের টঙ্গীতে ১২ দফা দাবিতে ‘যমুনা অ্যাপারেলস’ নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ বুধবার টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় বহিরাগতদের মারধরে চারজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। 

পরে নিরাপত্তা পরিস্থিত বিবেচনা করে ওই কারখানাসহ আশপাশের পাঁচটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (টঙ্গী জোন) মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১২ দফা দাবিতে সকাল থেকে ওই কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। আন্দোলন জোরদার করতে আশপাশের চারটি কারখানায় যান বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। পরে পাঁচটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকার ড্রেসম্যান ফ্যাশন ওয়ার লিমিটেড, মেঘনা রোড এলাকায় ব্রাভো অ্যাপারেলস ম্যানুফ্যাকচার লিমিটেড ও গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড এবং এজি ড্রেসেস লিমিটেড। 

শিল্প পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল থেকে আট কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবিতে কারখানার প্রধান ফটকে সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন যমুনা অ্যাপারেলসের শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তাঁরা লোকজন জড়ো করতে পাশের এমট্রানেট গ্রুপের গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ কারখানার শ্রমিকদের ডাকেন। 

টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা ওই কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভাঙচুর করা হয়। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা যান একই গ্রুপের ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেড ও পিনাকি গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এজি ড্রেসেস লিমিটেড কারখানায়। 

এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বাধা দেয় স্থানীয় কিছু বহিরাগত। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হন চার শ্রমিক। পরে বেলা ২টার দিকে ১২ দফা দাবি মেনে নিলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার সামনে থেকে চলে যান। 

আহত শ্রমিকেরা হলেন ব্রাভো অ্যাপারেলস কারখানার অপারেটর কুলসুম, শরিফুল ইসলাম, রানা রঞ্জিত আলামিন ও নাঈম। তাঁরা টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. জহিরুল ইসলাম। 

আহত শ্রমিক কুলসুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বুধবার সকালে অন্যদের সঙ্গে আমিও কারখানায় কাজে যোগ দিই। বেলা ১১টার দিকে যমুনা অ্যাপারেলস ও ড্রেসম্যান ফ্যাশন ওয়ার কারখানার শ্রমিকেরা তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আমাদের ডাকে। আমরা যোগ না দেওয়ায় কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।’ 

তিনি বলেন, ‘এরই একপর্যায়ে আমাদের কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করা হয়। আমরা কারখানা থেকে বেরোতে কয়েকজন নারী আমাদের লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। আমি পিঠে আঘাত পেয়ে আহত হই। সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ 

এজি ড্রেসেস কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানার শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেনি। আমাদের কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনেও যোগ দেয়নি। দুপুরে কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে ছুটি ঘোষণা করি। টঙ্গীর পোশাক কারখানাগুলোতে লুটপাট করতে একটি চক্র চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশ কঠোর ভূমিকা পালন না করলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত