সোহেল চৌধুরী হত্যা: জবানবন্দি দিয়েছেন অন্যতম আসামি বান্টির গাড়ি চালক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১৭: ৩৪

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের গাড়ি চালক দিয়ান খান আজ রোববার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হই, নায়ক সোহেল চৌধুরীও গুলিবিদ্ধ হন। আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাসায় যাই। এরপর নায়ক সোহেল চৌধুরী মারা যান।’

এই মামলার তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে দিয়ান খানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন বিচারক মো. জাকির হোসেন। বিপক্ষের আইনজীবীরা পরে তাকে জেরা করেন। ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৩ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

দিয়ান জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার রাতে বান্টি ইসলামকে নিয়ে বনানীর ট্র্যাম্পস ক্লাবে যান তিনি। বান্টি ইসলামকে নামিয়ে দিয়ে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। রাত তিনটার দিকে আবার তিনি তাঁর মালিক বানটি ইসলামকে ক্লাব থেকে আনতে যান। সেখানে গন্ডগোল হয়। একপর্যায়ে গোলাগুলি হয়। একটি গুলি তাঁর গায়ে লাগে। তাকে স্থানীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফেরেন। পরে তিনি জানতে পারেন ওই ঘটনায় নায়ক সোহেল চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হন। তিনি মারা যান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দিয়ান গায়ে কার গুলি লাগে বা কাদের গুলিতে সোহেল চৌধুরী নিহত হয়েছেন তা তিনি উল্লেখ করেননি। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় এই নিয়ে তিনজন সাক্ষ্য দিলেন।

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে রফিকুল ইসলাম গত ১৪ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন। এর আগে মামলা বাদী সোহেল চৌধুরীর বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী সাক্ষ্য দেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়।

দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা নথি গায়েব হয়েছিল। গত ২৩ জানুয়ারি দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘নায়ক খুনের মামলা গুম’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। নথি খুঁজে বের করার দাবিতে রিট আবেদন হয়। পরে নথি পাওয়া যায়। মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এই মামলার কেস ডকেট (সিডি) খুঁজে না পাওয়ায় কয়েক মাস অতিবাহিত হয়। শেষ পর্যন্ত কেস ডকেট ছাড়াই সাক্ষ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাইব্যুনাল।

এই মামলায় আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী জামিনে আছেন। আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, সাজিদুল ইসলাম ও তারিক সাঈদ মামুনকে কারাগার আছেন। আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান পলাতক রয়েছেন। 

১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। ঘটনার পর সোহেলের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বাদানুবাদই এ হত্যার নেপথ্য কারণ বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত