চাহিদা কমছে কোষা নৌকার

মো. নাজিম উদ্দিন, কেরানীগঞ্জ
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২১, ১২: ৩৭

খাল, বিল ও নদী ঘেরা উপজেলা কেরানীগঞ্জ। বর্ষা মৌসুম এলেই আগে এ উপজেলার চারদিকে দেখা যেত শুধু পানি আর পানি। পুরো উপজেলা রূপ নিত বৃহৎ এক দ্বীপে। ফলে বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের চলাচলের অন্যতম বাহন ছিল কোষা নৌকা। তবে অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে এখন আর আগের মতো জলাশয় নেই। ফলে দিন দিন উপজেলায় কমছে কোষা নৌকার।

গতকাল বুধবার উপজেলার রাজেন্দ্রপুর এলাকায় এক কোষা নৌকার কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, অলস সময় পার করছেন নৌকার কারিগরেরা। নৌকার বিকিকিনিও নেই তেমন।

কোষা নৌকা তৈরির কারখানার মালিক মো. ইমরান বলেন, ‘এ বছর কোষা নৌকার চাহিদা একেবারেই কম। এবার ভরা মৌসুমেও তেমন বেচাকেনা হয়নি। তাই এখন লোকসানেই কোষা নৌকা বিক্রি করছি। আমি এ পেশায় আছি প্রায় ২২ বছর যাবৎ। আগে আমার দোকানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন কারিগর কাজ করতেন। অথচ এবার আমি মাত্র চারজন কারিগর নিয়ে কাজ করছি।’

ইমরান বলেন, ‘একেকটি কোষা প্রতি কারিগররা মজুরি পায় ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। কাঠ আর মজুরি দিয়ে একটি কোষা তৈরিতে এখন খরচ পড়ে যায় প্রায় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। অথচ একেকটি নৌকা আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করতেও এখন কষ্ট হচ্ছে। গত বছর প্রায় আড়াই হাজারটি কোষা নৌকা বিক্রি করেছি। অথচ এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে তবুও এক হাজার কোষা নৌকা বিক্রি করতে পারিনি।’

কোষা নৌকার তৈরির কারিগর কালাচাঁন মিয়া বলেন, ‘গেল কয়েক বছর আগে কোষার এত চাহিদা ছিল যে কোষা তৈরি করে দম ফেলার ফুসরত ছিল না। অথচ এবার একেবারেই কাজ নেই। কাজ কম থাকায় এখন অনেক কারিগর অন্য কাজে যোগ দিচ্ছে। এখন আর আগের মতো পানি নাই, তাই কোষা নৌকার বেচাকেনাও নাই।’

উপজেলার বাঘৈর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ‘আগে বর্ষার সময় চারদিকে পানি থই থই করত। ড্রেজার বসিয়ে বালু দিয়ে চারিদিক ভরাট করে ফেলায় এখন আর উন্মুক্ত জলাশয় নেই। ফলে কোষা নৌকার চাহিদাও আর আগের মতো নেই।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত