Ajker Patrika

পথশিশুদের পুরো সপ্তাহের আয় হাজার টাকার কম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০২: ১১
পথশিশুদের পুরো সপ্তাহের আয় হাজার টাকার কম

দেশের পথশিশুরা পুরো সপ্তাহ কাজ করে এক হাজার টাকারও কম পায়। চায়ের দোকান, কারখানা এবং ওয়ার্কশপে তারা কাজ করে। তাদের এক-তৃতীয়াংশ কর্মক্ষেত্রে আহত হয়। বাকি অর্ধেক শিশু শিকার হয় সহিংসতার। কাজে বাধ্য হওয়া এসব শিশুর প্রায় অর্ধেকেরই বয়স ৯ বছর।

জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত ‘সার্ভে অন স্ট্রিট চিলড্রেন ২০২২’ 
শীর্ষক জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য। গতকাল সোমবার এই জরিপ প্রকাশিত হয়।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পথশিশুদের বেশির ভাগই ছেলে, যা মোট সংখ্যার ৮২ শতাংশ। তাদের বেশির ভাগ দারিদ্র্যের কারণে বা কাজের সন্ধানে পথে নেমেছে। এসব শিশুর প্রায় ১৩ শতাংশ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। ৬ শতাংশ শিশু এতিম অথবা বাবা-মা বেঁচে আছেন কি না জানে না। এই শিশুদের প্রতি তিনজনের মধ্যে অন্তত একজন জীবনের সবচেয়ে মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত। তারা খোলা জায়গায় ঘুমায়। প্রায় অর্ধেক শিশু মাটিতে ঘুমায় শুধু একটি পাটের ব্যাগ, শক্ত কাগজ, প্লাস্টিকের টুকরো বা একটি পাতলা কম্বল নিয়ে। শিশুদের প্রতি সহিংসতার প্রতি তিনটি ঘটনার একটি ঘটে রাতে তাদের ঘুমের সময়।

ঢাকাসহ আট বিভাগের ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৭ হাজার ২০০ পথশিশুর কাছে গিয়ে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে জরিপ প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। জরিপে পথশিশুদের মোট সংখ্যা না থাকলেও ইউনিসেফের বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া শিশুদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই পথচারীদের নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে।

পথশিশুদের প্রতি ৪ জনের মধ্যে ৩ জন পড়তে বা লিখতে পারে না। জরিপে অংশ নেওয়া শিশুদের অর্ধেকের বেশি জানায়, জরিপের আগে তিন মাসের মধ্যে তারা জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা ও পানিবাহিত রোগে ভোগে। পথশিশুদের সেবা দেওয়া সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তারা যে সহায়তা পেতে পারে, সে সম্পর্কে বেশির ভাগ শিশুই জানত না।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রতিবেদনে উঠে আসা এই চিত্র দেশের পথশিশুদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নীতিমালা প্রণয়ন ও কর্মসূচি গ্রহণে সহায়ক হবে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘প্রতিবেদনে উঠে আসা বিষয়গুলো বেদনাদায়ক।

এ বিষয়গুলো কেবল আমাদের কাজ করার জায়গাগুলো দেখিয়ে দেয় না, এই শিশুদের জন্য আমাদের সহানুভূতি এবং সহায়তার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত