আশুলিয়ায় ৩৯ পোশাক কারখানা বন্ধ, ১৩টিতে ছুটি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ৩৪
Thumbnail image

প্রশাসনের নানামুখী প্রচেষ্টাতেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকা। আজ শনিবার শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ১৩টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর আগ থেকে আরও ৩৯টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। 

গতকাল শুক্রবার শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে আশুলিয়ার জামগড়ায় শ্রমিক-জনতার সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। 

তারা শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানান। এর আগে বিজিএমইএতে শ্রমিক, মালিক ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ সভায় শ্রমিকদের যৌক্তিক সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। 

জানা যায়, ক্রমাগত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলের ৮৬টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শ্রম আইন-২০০৬–এর ১৩ (১) ধারায় এসব কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিনই কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছেন মালিকেরা। 

এমন পরিস্থিতিতে পুরো শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল ও নবীনগর-চন্দ্রা সড়কে সেনাবাহিনী, এপিবিএন পুলিশ, শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের টহল জোরদার করা হয়। অনেক কারখানার সামনেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে। 

পুলিশ জানায়, আশুলিয়ায় ৮৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৭টি কারখানা আজ (শনিবার) খুলেছে। এ ছাড়া যেসব কারখানা চালু ছিল সেসব কারখানাও যথারীতি খোলা হয়। নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিকেরা কর্মস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু কর্মস্থলে উপস্থিত হলেও ১৩টি কারখানার শ্রমিকেরা কাজ না করে বসে থাকেন। 

পরে কর্তৃপক্ষ আজকের (শনিবার) জন্য কারখানাগুলো ছুটির ঘোষণা দেন। ছুটি ঘোষণার পর শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে যে যার মতে বাসায় চলে যান। কোন ভাঙচুর বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেননি তারা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কারখানা মালিক বলেন, ‘শ্রম আইন অনুযায়ী পোশাক কারখানার শ্রমিকদের যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তার পুরোটাই তারা পাচ্ছেন। তবে কিছু কারখানায় হয়তো বা শ্রম আইন মানা হচ্ছে না। আবার শ্রমিকরাও আইনের বাইরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দাবি করছেন। মূলত এসব কারণেই প্রতিদিন কোনো কোনো কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। আমি মনে করি, মালিকপক্ষ উদ্যোগী হলে এই সমস্যা দূর করা বড় কোন বিষয় নয়।’ 

গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে সহস্রাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে মুষ্টিমেয় কিছু কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। যা পাঁচ থেকে ছয় শতাংশের বেশি নয়। জেনারেল সমস্যা থাকলে সব কারখানাতে তা হওয়ার কথা ছিল। 

কিন্তু তাতো হচ্ছে না। তাই আমি মনে করি, যেসব কারখানায় সমস্যা হচ্ছে ওই সব কারখানায় মালিক ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের দূরত্ব আছে। যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।’ 

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকে সাভার–আশুলিয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা ৮৬টি কারখানার মধ্যে আজ ৪৭টি খুলেছে। ১৩টি কারখানা আজ ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। বাকি সব কারখানা চালু ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত