রাজধানীর আইডিয়াল কলেজের সাময়িক বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ এবং দুই শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী ও তরুণ কুমার গাঙ্গুলী তাঁদের বিরুদ্ধে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন এবং নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে এমন অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। তাঁরা দাবি করেন, এসব ঘটনায় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. শামছুল আলম জড়িত রয়েছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঐতিহ্যবাহী আইডিয়াল কলেজের (সেন্ট্রাল রোড, ধানমন্ডি) গভর্নিং বডি, অধ্যক্ষ ও দুইজন শিক্ষক সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে সাময়িক বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ আরও দুই বহিষ্কৃত শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জসিম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘সাবেক অধ্যক্ষ শামছুল আলম সাহেব কর্তৃক অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কতিপয় দুর্নীতিপরায়ণ, অযোগ্য ও সুবিধাভোগী শিক্ষক-কর্মচারী তাঁদের নিজ নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে এবং কলেজের সুনাম বিনষ্ট করে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট মন গড়া তথ্য উপস্থাপন করেন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত গভর্নিং বডির সম্মানিত সভাপতি মহোদয়ের দায়িত্বের সময়কাল নিয়েও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন।’

অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজের আচরণবিধি ও শিষ্টাচার ভঙ্গকারী কর্মকাণ্ড ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনোরূপ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাবেক অধ্যক্ষ শামছুল আলম সাহেব কর্তৃক অবৈধ ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগকৃতরা এসব করছেন। তাঁর নিকট আত্মীয়স্বজন ও নিজ এলাকার প্রায় ৫৫ জন শিক্ষক কর্মচারী জোটবদ্ধ হয়ে মূলত কলেজটিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রশাসনকে হেয়প্রতিপন্ন করে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছেন।’

১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষর ব্যতিরেকে এককভাবে কলেজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন সম্ভব না।’

এ সময় জসিম উদ্দীন আহম্মেদ অর্থ ব্যয়ের হিসাব দেখিয়ে বলেন, ‘২০২০ সালের মার্চ মাসের পর করোনা মহামারির কারণে প্রায় ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর থেকে টিউশন ফি পাওয়া যায়নি। কলেজটি স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত বিধায় করোনাকালীন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানে কলেজের ১১ কোটি টাকার এফডিআর ভাঙানো হয়।’

পিএইচডি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পিএইচডি ডিগ্রির জন্য দুটি সেমিনারে (অনলাইনে) প্রেজেন্টেশন হয়। একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদ ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের কপি আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে স্টুডেন্ট সার্ভিস প্যানেলে আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দেখা যায়। ডিগ্রির থিসিস পেপার ইন্ডিয়ার দুইটি জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই ডিগ্রির জন্য কলেজ থেকে কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা পাইনি বা দাবি করিনি।’