Ajker Patrika

‘ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায়’ বেতন আটকা, ক্যানসার আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারীর চিকিৎসা বন্ধ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
‘ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায়’ বেতন আটকা, ক্যানসার আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারীর চিকিৎসা বন্ধ

গাজীপুরের শ্রীপুরে টাকার অভাবে ক্যানসার আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারীর চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাঁর বেতন আটকে রেখেছেন। তবে ওই কর্মকর্তা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগী শাহীন আক্তার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পদে কর্মরত। তিনি উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সামসুদ্দিনের মেয়ে। 

জানা গেছে, ২০১৬ সালে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন শাহীন আক্তার। এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালেই তিনি সন্তান প্রসব করেন। সুস্থ হয়ে কাজে ফিরলেও আটকা পড়ে মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ এক বছরের বেতনভাতা। এরই মধ্যে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ২৫টি রেডিও থেরাপি এবং ৮টি কেমো থেরাপি নেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। অফিসে দৌড়াদৌড়ি করেও এক বকেয়া পাচ্ছেন না শাহীন।

শাহীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাল স্যারকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৬ হাজার টাকা দিয়েছি। তাতেও কাজ হয়নি, তিনি আমার মাতৃত্বকালীন ভাতার ২৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি টাকা আনতে অফিস যাই। মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা কেশ হলেও অফিস সহকারী মাসুদ আমাকে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দেন। টাকা কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বড় স্যারের কথা বলেন। স্যারের দাবি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা না দেওয়ায় আমাকে টাকা দেননি। জামাল স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছুটি বাতিল করেন এবং বেতন বন্ধের হুমকি দেন। ১ লাখ ৪২ হাজার টাকার আরেকটি বিলও তিনি আটকে রেখেছেন। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অফিস সহকারী গাজী মাসুদ সাজ্জাদ বলেন, ‘শাহিনের বিল পাস হয়েছে। স্যার আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেছিলেন। টাকা কম দেওয়ায় তিনি টাকা নেননি। টাকা কেন কম দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না। স্যার বলতে পারবেন।’

তবে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কোনো টাকা রাখা হয়নি। পুরো টাকাই পাবে। হিসাবরক্ষকের কাছে টাকা আছে। তার টাকা সেই পাবে।’ টাকা পেতে দেরির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেরি হবে কেন? অফিসে এলেই টাকা নিতে পারবে।’ টাকা কম দিচ্ছেন কেন জানতে চাইলে জবাবে তিনি কোনো কথা বলেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর গাজীপুরের উপপরিচালক ফৌজিয়া আসমত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে মোতাবেক প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত