নববর্ষে ঢাবি ক্যাম্পাসে সকল ধরনের যানবাহন বন্ধ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১৮: ১৩
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৩৫

নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ব্যতীত অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি মোটরসাইকেল চলাচলও সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে এ নিয়ম চালু থাকবে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আজ রোববার ঢাবিতে বাংলা নববর্ষ সুষ্ঠুভাবে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তথ্যগুলো জানা যায়। 

সুষ্ঠুভাবে নববর্ষের কর্মসূচি পরিচালনার উদ্দেশ্যে সভায় উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সকল ধরনের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এ জন্য বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর বের হওয়া ছাড়া কোনোভাবেই আর প্রবেশ করা যাবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোন ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন। 

নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়, টিএসসি থেকে বের হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর সংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে। নির্মাণাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের কারণে চলাচলের পথ সরু থাকায় ও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

পাশাপাশি পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরা যাবে না কোনো ধরনের মুখোশ। বহন করা যাবে না কোনো ধরনের ব্যাগ। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। এ ছাড়া সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

নববর্ষের দিন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। আগতরা উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদ সম্মুখের ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সম্মুখের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন। বের হওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট ও বাংলা একাডেমির সম্মুখের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ব্যবহার করতে হবে। 

এ ছাড়া আগতদের সুবিধার্থে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বর এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি পুলিশের আওতায় নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করা হবে। 

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নববর্ষ-১৪২৯ সুষ্ঠুভাবে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করেছে। সকলের প্রতি আহ্বান, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং মেট্রোরেলের চলমান উন্নয়নকাজের জন্য চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে আনন্দময় পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নববর্ষ উদ্‌যাপন করবেন।’ তিনি তাঁর বক্তব্যে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় জনসমাগম সীমিত রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ করেন। 

উপাচার্যের সভাপতিত্বে পরিচালিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, প্রক্টর, অফিস প্রধানগণ এবং বিভিন্ন সমিতির প্রতিনিধি বর্গ। 

সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে আরও দুটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। সেগুলো হচ্ছে—শৃঙ্খলা উপ-কমিটি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটি। ১২ সদস্যবিশিষ্ট শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং সদস্যসচিব সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম। ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং সদস্যসচিব সহকারী প্রক্টর মো. নাজির হোসেন খান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত