৩ দাবি না মানলে ভোট বর্জনের হুমকি হিন্দু মহাজোটের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪: ১৫

সংসদে ৬০টি সংখ্যালঘু আসন সংরক্ষণ, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য একটি উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ তৈরি—এই ৩টি দাবি না মানলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট বর্জন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

আজ শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডের ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের এ পরিকল্পনার কথা জানান সংগঠনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে এসব দাবি জানাচ্ছি। যদি আগামী নির্বাচনের আগে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হয় এবং কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের নির্বাচনের ইশতেহারে এসব দাবি অন্তর্ভুক্ত না করে তাহলে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে ভোট দেব না। তখন ভোট বর্জন ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ থাকবে না।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত—এই এক বছরে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১৫৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার হুমকি পেয়েছেন ৮৪৯ জন, ৪২৪ জনকে হত্যা চেষ্টা, জখম ও আহত করা হয়েছে ৩৬০ জনকে, নিখোঁজ হয়েছেন ৬২ জন। চাঁদাবাজি হয়েছে ২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, মোট ক্ষতি হয়েছে ২২০ কোটি ৮৯ লাখ ০ ৬৫ হাজার ৭০০ টাকার। পরিবার ও মন্দির লুট হয়েছে ৩১৯ টি।

বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে ৮৯১ টি, অগ্নিসংযোগ হয়েছে ৫১৯টি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর, ১৭৩ টি।’

ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল ও ত্রিপুরা পাহাড়ি আদিবাসীদের ৬ হাজার ৫৫০ একর এবং সমতলের হিন্দুদের ২৪৪০.৬৩ একর শতাংশ ভূমি দখল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘ঘরবাড়ি দখল হয়েছে ৫৭ টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৫০ টি, মন্দিরের ভূমি দখল হয়েছে ৫১ টির। দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে ৪৪৫টি পরিবার। সংঘবদ্ধ হামলা হয়েছে ৯৫৩ টি। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ১২৮ টি, প্রতিমা ভাঙচুর ৪৮১ টি, প্রতিমা চুরি ৭২ টি, অপহরণ করা হয়েছে ১২৭ জনকে, ৩৯ জনকে ধর্ষণ করা হয়েছে, গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৭ জন।’ এ ছাড়া ২০২২ সালের দুর্গাপূজায় ৩৫টি হামলায় ৯১টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে এ বছর কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু নির্যাতন কমেছে বলেও জানান তিনি। অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘পরিসংখ্যান বলছে দেশে ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন বাড়লেও ২০২২ সালে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু নির্যাতন কমেছে।

প্রতিমা ভাঙচুর, জমি দখল সহ কিছু ক্ষত্রে নির্যাতন কমেছে। আমরা মনে করি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পুলিশ, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের তৎপরতা ও ত্বরিতগতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই সংখ্যালঘু নির্যাতন কিছু ক্ষেত্রে কমেছে। আমরা মনে করি প্রশাসন বর্তমান অবস্থার মতো আন্তরিকভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করলে সংখ্যালঘু নির্যাতন উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য অভয় কুমার রায়, যুগ্ম মহাসচিব সুজন দে, সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক প্রদীপ চন্দ্র চন্দ, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক সুমন সরকার, দপ্তর সম্পাদক কল্যাণ মণ্ডল, হিন্দু মহিলা মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট লাকী বাছাড়সহ অন্যরা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত কয়েকজন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত