পুলিশ-বিচারকদের ওপর হামলা করতে বাহরাইন থেকে এসেছিলেন মনির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২২, ১৪: ৩১
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১৫: ০১

বাহরাইনপ্রবাসী কুমিল্লা, লাকসামের বাসিন্দা মনির আব্দুর রাজ্জাক অনলাইনে বিভিন্ন কনটেন্ট দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। জঙ্গি সংগঠন গাজওয়াতুল হিন্দে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের বিচারক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশে আসেন মনির। 

হামলা চালিয়ে আবারও বাহরাইনে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। এর জন্য বেশ কিছু স্থানে রেকিও করেন সেলফ রেডিকালাইজড এই মনির। 

আজ রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গতকাল শনিবার রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনির আব্দুর রাজ্জাককে (৪০) গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। 

সিটিটিসি জানায়, মনিরের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশ পাওয়া যায়নি। সাইবার স্পেসে বিভিন্ন কনটেন্ট দেখে নিজেই উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হামলার পরিকল্পনা করেন। 

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা মনির ২০০৭ সালে শ্রমিক হিসেবে বাহরাইনে যান। ২০১৮ সালে দেশে এসে আবার বাহরাইনে যায় তিনি। সেখানেই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন রেডিকালাইজড কনটেন্ট দেখে নিজে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব কনটেন্ট শেয়ার করতেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার ডিভাইস বিশ্লেষণ করে ভয়ংকর তথ্য পাওয়া গেছে। সেলফ রেডিকালাইজড মনির একপর্যায়ে জিহাদের প্রস্তুতি নেন। এরই অংশ হিসেবে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন। পুলিশ ও বিচারকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। ঘটনা ঘটিয়ে আবারও ফেরত যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।’ 

নিজে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি মনির অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করতেন উল্লেখ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি গাজওয়াতুল হিন্দের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিতেন। বাহরাইনে তাঁর পাকিস্তানি এক সহকর্মীর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে পাকিস্তানি পরিচয় দিয়ে একটি আইডি খোলেন। সেটি দিয়ে নানা রকম সরকারবিরোধী, উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন। মনিরের ধরনা ছিল, যেহেতু তিনি বিদেশে, সেহেতু তাঁকে কেউ ধরতে পারবে না।’ 

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘দেশে এসে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছদ্মবেশে বিভিন্ন জায়গা রেকি করছিলেন। এ অবস্থায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা মনে করছি, তাঁকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একটি বড় ঘটনা থেকে রক্ষা পেল। তাঁকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাঁর পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে পেরেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তাঁর কিছু সহযোগীর নাম আমরা পেয়েছি। তাঁদের গ্রেপ্তারে কাজ চলছে। গ্রেপ্তার মনিরকে আদালতে রিমান্ড প্রার্থনা করে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি তাঁকে রিমান্ডে পাব।’ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত