কাঁঠালের বাজার জমজমাট

আনিসুল ইসলাম, কাপাসিয়া (গাজীপুর)
Thumbnail image

ঢাকা অঞ্চলের উত্তরের উঁচু ভূমি গাজীপুরের কাপাসিয়া কাঁঠাল উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই অঞ্চলের কাঁঠাল খুবই সুস্বাদু হওয়ায় দেশের প্রায় সব জায়গায় রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। চলতি মৌসুমে ট্রাকবোঝাই করে কাপাসিয়ার কাঁঠাল সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। এ বছর উপজেলায় ফলটি চাষ হয়েছে ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে ৬০ হেক্টর বেশি।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁঠালের মৌসুম শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা কাপাসিয়ায় কাঁঠাল কিনতে আসছেন। সারা দিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ ফল কিনে সড়ক ও নদীপথে গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। বাজারে কাঁঠালের প্রচুর সমারোহ রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত দুর্গাপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ ও রাওনাট বাজার, চাঁদপুরের ঘাটকুড়ি ও চাঁদপুর বাজার, কাপাসিয়া সদরের কাপাসিয়া, রায়েদ ও আমরাইদ বাজার, টোক ইউনিয়নের টোক ও বীর উজুলী বাজার, সনমানিয়ার আড়াল বাজার, ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ঘাগটিয়া ও চালার বাজার এবং কড়িহাতার বেগুনি বাজার।

ঢাকা-কাপাসিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে কাপাসিয়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, খেয়াঘাট মোড়ে কাঁঠাল কিনে স্তূপ করে রেখেছেন পাইকার। চারদিকে মিষ্টি গন্ধ। ছুটে চলছে কাঁঠালভর্তি ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, ছোট-বড় পিকআপ। ভ্যানবোঝাই কাঁঠাল নিয়ে বাজারে আসা চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের আকার অনেক বড় হয়েছে, রং অনেক সুন্দর। যে কারণে এ বছর চাহিদা ভালো। ফলনও ভালো হয়েছে। দামও ভালো পেয়েছি।’

কাপাসিয়া বাজার থেকে কাঁঠাল কিনে সিলেটে নিয়ে বিক্রি করেন মো. শহীদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘কাপাসিয়ার কাঁঠালের অনেক চাহিদা। তাই প্রতিবছরই কাপাসিয়া থেকে কাঁঠাল কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি। আজ যে কাঁঠালগুলো কিনেছি, তা সিলেটে নিয়ে বিক্রি করব। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকা করে কাঁঠাল কিনেছি।’ কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে কাঁঠাল নেওয়া পাইকার মো. কাজিম উদ্দিন আকন্দ জানান, তিনি ৫৫ থেকে ৯৫ টাকা করে কাঁঠাল কিনেছেন কৃষক ও ছোট পাইকারদের কাছ থেকে। এ ছাড়া ৫ টাকা করে বাজারের খাজনা ও ৩ টাকা করে ট্রাকে বোঝাই খরচ দিয়েছেন। এ ছাড়া ট্রাক ভাড়া বেড়েছে। এই খরচ বাড়লেও চাহিদা বেশি থাকায় কাপাসিয়া থেকে কাঁঠাল নিচ্ছেন।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক বলেন, কাপাসিয়ায় এ বছর কাঁঠালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার টন। আশা করা হচ্ছে, তা অর্জিত হবে। কাপাসিয়ার কাঁঠাল অনেক সুস্বাদু। এই ফলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বাজারজাতকরণ। কাঁঠাল যখন পাকে, তখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে। তবে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে রাখার ব্যবস্থা চালু হলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা লাভবান বেশি হতেন, যাতে পরবর্তী সময় কাঁঠাল বিক্রি ও ব্যবহার করা যায়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত