৮ বছরেও শুরু হয়নি জবির আইন বিভাগের ছাত্র নাজিম হত্যা মামলার বিচার

আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা
Thumbnail image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র নাজিম উদ্দিন সামাদ ওরফে ব্লগার নাজিম ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে খুন হন। আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার শুরু হয়নি আসামিদের।

মামলার আসামিরা সবাই জঙ্গি। তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য।

নাজিম হত্যার চার বছর তদন্ত শেষে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এরপর কেটে যায় আরও সাড়ে তিন বছর।

মামলাটির বিচার চলছে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। নিরাপত্তা জনিত কারণে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির না করায় বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। ২০২০ সালের ঢাকার আদালত থেকে ২ জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর আর জঙ্গিদের হাজির করা হচ্ছে না।

এদিকে আসামিদের আদালতে হাজির না করায় এ মামলার বিচার শুরু করতে পারেননি বলে স্বীকার করেন রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার কারণে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যাচ্ছে না বলে বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত বিচার কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ এ মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। নিরাপত্তা জনিত কারণে কারাগারে আটক থাকা আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যায়নি বলে কারা কর্তৃপক্ষ ট্রাইব্যুনালকে চিঠি লেখেন। পরে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১৬ মে দিন ধার্য করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে জঙ্গিরা কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করেন ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে। এ ঘটনায় পরদিন সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

২০২০ সালের ২০ আগস্ট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে ওলি ওরফে তাহেব ওরফে তাহসিন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক ও মাওলানা জুনেদ আহাম্মেদ ওরফে সাব্বির ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের পলাতক রয়েছেন।

এ ছাড়া অপর চার আসামি রশিদুন নবী ভূঁইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ কারাগারে আটক রয়েছেন।

২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি মেজর জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। পলাতক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি পলাতক পাঁচজনের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

ব্লগে লেখালেখি করার কারণে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা নাজিম উদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতা ও সামরিক শাখার প্রধান সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়ার পরিকল্পনায় নাজিম উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মনের নেতৃত্বে একটি টিম নাজিম উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার অবস্থান রেকি করে। মো. শেখ আব্দুল্লাহ এ হত্যার ভিডিও ধারনের জন্য এবং হত্যাকারীদের হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পর পালাতে সহযোগিতার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকেন। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর জিয়াকে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত