কারাগারে আত্মহত্যা করল সাংবাদিক ইলিয়াসের হত্যাকারী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ১২

নারায়ণগঞ্জ বন্দরের স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি তুষার নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারাগারের একটি খালি ওয়ার্ডে প্রবেশ করে গলায় ফাঁস দেয়। 

আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন। তুষার ২০২০ সালে সাংবাদিক ইলিয়াসকে হত্যার পরপরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এরপর থেকেই সে কারাগারে বন্দী ছিল। 

জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, গতকাল কারাবন্দীদের সেলে প্রবেশের দশ মিনিট আগে সে নিজের সেল বাদ দিয়ে অন্য আরেকটি খালি সেলে প্রবেশ করে। সেখানে তাঁর ব্যবহৃত চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। ডিউটিরত সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাকে গোঙ্গানিরত অবস্থায় উদ্ধার করে। অচেতন অবস্থায় তাকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রায় আধঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর সাড়ে ৭টার দিকে মৃত্যুবরণ করে তুষার। 

মোকাম্মেল হোসেন আরও বলেন, তুষার গত কয়েক দিন ধরেই অস্থিরতায় ছিল। কারণ তাঁর মামলার রায়ের তারিখ ঘনিয়ে আসছিল। নামাজের পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজও পড়ত। তার সেলে থাকা অন্য বন্দীদের বলত ‘আমার জন্য দোয়া করিস। আমার কিছু যদি হয়ে যায়। আমি তো আদালতে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছি। আমি তো রেহাই পাব না।’ আমাদের ধারণা সে তার মামলার রায় নিয়ে মানসিক চাপ নিতে পারেনি। 

মোকাম্মেল হোসেন বলেন, নিহতের লাশ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুরতহাল রিপোর্ট হবে। এরপর বিকেলের মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষ করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

নিহত তুষার ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর ইলিয়াসকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর ১৪ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালতে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। 

জানা যায়, গ্যাসের অবৈধ লাইনের সংযোগ দেওয়া নিয়ে তুষারের সঙ্গে ইলিয়াসের বিরোধ হয়। এ নিয়ে সংবাদ করায় ক্ষুব্ধ ছিল তুষার। তার জের ধরেই সাংবাদিক ইলিয়াসকে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় ইলিয়াসের স্ত্রী ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় তুষার (২৮), মিন্নাত আলী (৬০), মিসির আলী (৫৩), হাসনাত আহমেদ তুর্জয় (২৪), মাসুদ (৩৬), সাগর (২৬), পাভেল (২৫) ও হযরত আলীকে (৫০)। মামলার অন্যান্য আসামিরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত