ট্রাইব্যুনালে কাঁদলেন ওসি মাজহার, নির্দোষ দাবি এনটিএমসির জিয়াউলের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৪৮
Thumbnail image
বুধবার সকালে সাবেক আইজিপি মামুন ও জিয়াউল আহসানসহ ৮ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালের হাজির করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম। এ সময় বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আজ তার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিল না। তিনি নির্দোষ, তাকে যেন বাঁচানো হয়।

অন্যদিকে এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ফোনালাপ ফাঁস ও আয়নাঘর নিয়ে যে অভিযোগ, এসবের সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ বুধবার শুনানির সময় চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করেন। এ সময় অভিযোগ শুনে তাঁরা এসব প্রতিক্রিয়া দেন।

শুনানিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাভারের গণহত্যার ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। এসময় সেখানে শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা, আহত ও আশুলিয়া থানায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করেন।

চিফ প্রসিকিউটর সাভারের ঘটনায় ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম এবং সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করেন।

এ সময় কাঠগড়া থেকে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন মাজহারুল ইসলাম। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি কখনো সাভারে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম।’ তখন আদালত বলেন, ‘আমরা দেখব। সম্পৃক্ততা না থাকলে ন্যায় বিচার পাবেন।’

চিফ প্রসিকিউটর পরে বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। মাজহারুল ইসলাম সাভারে ছিলেন না। তিনি গুলশান থানার ওসি ছিলেন।’

এরপর তিনি গুলশান এলাকায় হত্যা, নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তাজুল ইসলাম বলেন, মাজহারুল ইসলাম গুলশানে দায়িত্ব পালনের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে হত্যার নির্দেশ দেন। তবে গুলশানের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার সময় নিশ্চুপ ছিলেন মাজহারুল ইসলাম।

অন্যদিকে চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সময় তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। আদালত তাঁর কথা না শুনতে চাইলে তিনি বলতে থাকেন, এনটিএমসির কাজ টেকনিক্যাল। এই কাজ দেশের সাধারণ জনগণ বোঝে না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মোবাইল ফোনে আড়িপাতা এবং ফোন কল রেকর্ড ফাঁস করার যে অভিযোগ আনা হয়, সেটিই এখন মূল অভিযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পরে ঘণ্টাখানেক ধরে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের এই শুনানি হয়। টার্মিনাল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন ১৯ ডিসেম্বর।

নায়েককে ধমক দিলেন জিয়াউল আহসান

চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান যখন ট্রাইব্যুনাল থেকে বের হয়ে প্রিজন ভ্যানে দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর দুই হাত চেপে ধরে রেখেছিলেন দুইজন কনস্টেবল ও একজন নায়েক।

ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন জিয়াউল আহসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন জিয়াউল আহসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ট্রাইব্যাল থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে জিয়াউল আহসান হাত নাড়াতে চাইলে একজন নায়েক তাঁর ডান হাত চেপে ধরেন। ওই নায়েকের উদ্দেশে জিয়াউল ধমক দিয়ে বলেন, 'এই তুই হাত ধরস ক্যান?’ এরপর বাম উঠিয়ে গণমাধ্যমের ক্যামেরার দিকে নাড়েন।

পরে প্রিয়জন ভ্যানে উঠে গণমাধ্যমের ক্যামেরার দিকে মুখ করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কখনো আয়না ঘরে চাকরি করিনি। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত