ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তনে সন্তোষ জাতিসংঘ প্রতিনিধির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ৩৯
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ৫২

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করায় সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। আইনটিকে ভালোভাবে যাচাই করার মতো কারিগরি জ্ঞান সম্পর্কিত ব্যক্তি আমি না। কিন্তু এই পরিবর্তনেই আমি খুব খুশি।’

আজ মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

জাতিসংঘের এ প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘আইনে কী পরিবর্তন করা হয়েছে, তা আমাদের ভালো করে দেখতে হবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন আর নেই। সেখানে নতুন আইন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।’ আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মানবাধিকার ইস্যু নিয়েও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। 
 
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তন নিয়ে আপনি খুশি কি না? জানতে চাইলে গোয়েন লুইস বলেন, ‘আমি টেকনিক্যাল পারসন না, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি দেখিওনি। তবে তারা যা করেছে, তা সত্যি হলে প্রশংসনীয়।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মার্কিন প্রতিনিধিরা অনেক দিন ধরেই শঙ্কার কথা জানিয়েছে। তারা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আইনটি আরও দেখতে চান। এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘নতুন যে আইনটি করা হয়েছে, সেটা এখনো তিনি সম্পূর্ণভাবে দেখেননি। এটা স্বাভাবিক।’

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আপনাদের যা বলেছি, তাঁর (গোয়েন) সঙ্গে আলোচনায়ও সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে একই কথা বলেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের একটি দফায় রয়েছে। এ কারণে এটিকে রহিত করা হয়েছে।’

সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মধ্যে যেসব টেকনিক্যাল ধারা ছিল, সাইবার নিরাপত্তা আইনেও তা আছে। 

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনও হয়নি, আবার সম্পূর্ণভাবে যদি কেউ বলে যে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন রহিত করা হয়েছে, সেটিও ঠিক হবে না। কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনগুলো অনেক বেশি হয়েছে। 

আইনটির নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পড়তে হতো, ডিজিটাল নিরাপত্তা সংশোধনী আইনটিও সঙ্গে রাখতে হতো। এতে বিভ্রান্তিকর হতো। যে কারণে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আর সাইবার নামটি রাখা হয়েছে ব্যাপ্তি বাড়াতে। যে কারণে এটিকে সাইবার নিরাপত্তা আইন নাম দেওয়া হয়েছে।’ 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ কি হবে? জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। আইনের অবস্থান হচ্ছে-যেসব অপরাধ পুরোনো আইনে করা হয়েছে, তা সে আইনে শাস্তি আদালত দিতে পারেন।’ 

আনিসুল হক বলেন, ‘সাইবার অপরাধ আইনে যেহেতু শাস্তির পরিমাণ অনেকাংশেই কমানো হয়েছে এবং সরকারের ও আইনসভার উদ্দেশ্য সেই কমানোটা যাতে বাস্তবায়িত হয়, সেই চেষ্টা করা।’ 
 
সাইবার নিরাপত্তা আইন জনগণের জন্য আরও ভোগান্তির কারণ হবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি ঢালাওভাবে মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু জিনিসটা যেহেতু তারা পড়েননি, তারা বোঝেননি, বলেই এই মন্তব্যটা করেছেন।’ 

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে নতুন একটি আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন আইনে সাজা কমানো হয়েছে, অজামিনযোগ্য ধারাকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। মানহানি মামলার জন্য কারাদণ্ডের বিধান বাদ দিয়ে শুধু জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে জরিমানার পরিমাণ পাঁচ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত