মেঘলার মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে, অভিযোগ পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৪৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এলমা চৌধুরী মেঘলা হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। তারা মেঘলার হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেঘলার মা শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯ এপ্রিল মেঘলার স্বামী ও হত্যার অভিযুক্ত আসামি ইফতেখারের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। সেদিন ঢাকার দায়রা জজ আদালতে ডিবি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন তখনো কোর্টে জমা হয়নি। আসামি পক্ষ প্রতিবেদন এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ফটোকপি আদালতে জমা দিয়েছিল মাত্র। বাদী পক্ষের আপত্তির মুখে বিচারক তাঁর বিচারকার্য স্থগিত রেখে উপযাচক হয়ে ডিবির সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন যে ফটোকপি বা আংশিক প্রতিবেদনগুলো সঠিক কি না, তারপর জামিনের আদেশ দিয়েছেন।

শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত আসামির পাসপোর্ট জব্দ করা হয়নি। যেকোনো সময় সে দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারে। বিবেচনায় আনা হয়নি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অসামঞ্জস্যগুলো। খুনের আসামিকে এভাবে নামমাত্র নথির ওপর ভিত্তি করে তাড়াহুড়ো জামিন দেওয়া অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়, নির্মম, নির্দয়। এর প্রতিবাদ করার ভাষা আমার জানা নেই।’

মেঘলার মা বলেন, ‘মাসখানেক আগে আমার স্বামী ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছিল ময়নাতদন্তের খোঁজ নিতে। তখন তাকে বলা হয় রিপোর্ট আরও এক মাস আগে থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা থানায় খোঁজ নিলে তারা জানায় তাদের কাছে কোনো রিপোর্ট আসেনি, ডিবিতে খোঁজ নেন। ডিবি বলে কোনো রিপোর্ট আসেনি, থানায় অথবা আবার হাসপাতালে গিয়ে নথি নম্বর নিয়ে আসেন। এভাবে সপ্তাহ ধরে নাটক চলতে থাকে, আমরা করতে থাকি অনুনয়, বিনয়। একসময় ডিবি থেকে ডাক আসে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জানানোর নামে ডিবি অফিসে ডেকে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আমাদের মানসিক হয়রানি করা হয়। আমাদের পরোক্ষভাবে চাপ দেওয়া হয়, এটাকে আত্মহত্যা হিসেবে মেনে নিতে।’

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মেঘলার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আসামি পক্ষের ক্ষমতার প্রভাবে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাদের অর্থ, প্রতিপত্তির কাছে হেরে যাচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত এর সুষ্ঠু বিচার হোক।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মেঘলার বোন সামান্তা চৌধুরী, তাঁদের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ বন্ধুজনেরা।

গত ডিসেম্বরে রাজধানী বনানীতে এলমা চৌধুরী মেঘলা নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শেষ বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতেই স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছিল ভুক্তভোগীর পরিবার। পরিবারের সদস্যরা হত্যা দাবি করলেও এলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, এলমা আত্মহত্যা করেছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত