প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ না করলে টেকসই উন্নয়ন হবে না: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

দেশের বর্তমান যে দর্শন তা নদী, জলাশয়, বন, পাহাড়, জলাভূমি ও প্রকৃতি বান্ধব নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ না করলে টেকসই উন্নয়ন হবে না। 

আজ রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এন্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত ‘আমাদের কৃষি, প্রকৃতি, জলাভূমির সুরক্ষা এবং নদী দখলদারি প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন। 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমাদের এখানকার দর্শন হচ্ছে বড় বড় বিল্ডিং, অবকাঠামো বানানো। জলাভূমি, বন হারিয়ে গেলে যে ঐতিহ্য হারিয়ে যায় তা আমরা টাকার অঙ্কে বিচার করি না। এখানে উন্নয়ন ও পরিবেশকে প্রায়ই মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। নদী, জলাশয়কে কেন্দ্র করেও এখানে অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব তবে সামষ্টিক উন্নতি হচ্ছে না। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ না করে টেকসই উন্নয়ন হবে না।’

নদী রক্ষা কমিশনের সমালোচনা করে রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘তাদের যে বলিষ্ঠতা আশা করি, তা নেই। আমরা একটা নদী, জলাশয় নতুন করে সৃষ্টি করতে পারব না। যেটা সৃষ্টি করতে পারব না তা যেন আমরা ধ্বংস না করি, এটাই আমাদের দর্শন হওয়া উচিত।’

অনুষ্ঠানে নদ-নদী, জলাশয় নিয়ে তুষ্টির বৃত্ত থেকে বের হয়ে সমস্যা-সংকটগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করতে হবে জানিয়ে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘আজ শুধু নদী-জলাশয় দখল হচ্ছে না, দখলদারেরা এখন নদী রক্ষা কমিশনও দখল করে ফেলেছে।’

প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিনিয়ত নদী রক্ষা কমিশনের জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদী, পানি, পরিবেশ নিয়ে যে সব আইন হয়েছে তা কোনোটার সঙ্গে কোনোটা সাংঘর্ষিক নয়। আমাদের স্বচ্ছতার অভাব আছে। আইনে সব স্পষ্ট আছে তাও কেন হচ্ছে না? সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। সব প্রতিষ্ঠানে ভালো মানুষ দিতে হবে’

মুজিবুর রহমান হাওলাদার আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে অথচ আমরা নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছি। নদী, জলাশয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। ডেল্টা প্ল্যান কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করা যাবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে এএলআরডির চেয়ারপারসন খুশী কবির বলেন, ‘আমাদের নদী, জলাশয়, প্রকৃতি, দেশ, মানুষ সবাইকে নিয়ে বাঁচতে হবে। এর জন্য সম্মিলিতভাবে লড়াই-সংগ্রামের বিকল্প নেই।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন। প্রবন্ধে তিনি বাংলাদেশের নদী, জলভূমি, প্রকৃতি ও কৃষির প্রতিবেশগত পরিস্থিতি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি জলাভূমির ক্ষয়, দখলের দুষ্টচক্র এবং দখলদারদের ক্ষমতার অপব্যবহার প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত