বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাকে পেটালেন মেয়র

প্রতিনিধি, ধামরাই
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২২, ২১: ৪৪
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২, ২২: ১২

ঢাকার ধামরাইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে আসা সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির মোল্লার বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ধামরাই যাত্রাবাড়ী এলাকার খেলার মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর কেক কাটার শেষে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী কুশুরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্বাসন গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হকের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৩৫)। তিনি সাটুরিয়া উপজেলায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।

এই ঘটনার ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবকের পেছন থেকে পাঞ্জাবির কলার ধরে রেখেছেন ধামরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সারোয়ার মাহবুব তুষার। তাঁর বাম পাশ থেকে রাজ্জাকের কোমরে একটা ঘুষি মারেন পৌর ছাত্রলীগের সদস্য আশরাফুল আলম শুভ এবং সামনের কলার ধরে তাকে পেটে ঘুষি মারার ভয় দেখাচ্ছেন পৌর মেয়র গোলাম কবির মোল্লা। আর ভুক্তভোগী যুবক ভয়ে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

পরে ধামরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সারওয়ার মাহবুব তুষার ওই যুবককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মঞ্চ থেকে তাড়িয়ে দেন। সেখানে মেয়রের পেছনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠান শেষে খাবার কম পড়ায় কয়েকজন নারী রাজ্জাকের কাছে খাবার চায়। পরে খাবারের জন্য ওই নারীদের মেয়রকে দেখিয়ে দেয়। এরপর মেয়র কিছু না বুঝে না শুনেই রাজ্জাককে একটা থাপ্পড় মারে ও গালিগালাজ করে। এর পরেই আরও কয়েকজন এসে রাজ্জাককে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে ও মারধর করে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিডিও ধারণকারী জানান, আমি অনেক পরে ভিডিও করেছি। প্রথমে মেয়ের একটা থাপ্পড় দিয়েছে এবং পাশের অনেকেই মেরেছে কিন্তু সেই ফুটেজ আমি ধারণ করতে পারিনি। 

সাটুরিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘অনুষ্ঠানে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু খাবার অনেকেই পায় না। তখন আমার কাছে কয়েকজন নারী খাবারের কথা বলেন। পরে আমি তাঁদের মেয়র আংকেলকে দেখিয়ে দিই। যে আংকেলের কাছে গিয়ে চান। আংকেল এর দায়িত্বে আছেন। এই কথা শুনে মেয়র আংকেল আমাকে কলার ধরে গালিগালাজ করে।’ 

মেয়র কবির মোল্লা আপনাকে মারধর করেছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি মৃদু স্বরে বলেন, ‘প্রথমে চর মেরেছে। তার পর ঘুষি মারতে চেয়েছিল কিন্তু মারেনি।’  

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন জানান, আমি সেখানে ছিলাম। মারধর করা হয়নি। এটা তেমন বড় কোনো  বিষয় না। ছোট একটা ঘটনা। 

এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে জানান এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। 

তবে পরে আবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে কেউ একজন এসে বলল আমার পকেটে হাত দিয়েছে আব্দুর রাজ্জাক। তখন আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন ভাই বললেন যে তাকে তিনি চিনেন। পরে তখন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত