শুরুর আগেই শেষ সোহেল তাজের পদযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ৩৪
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ২৪
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় চার নেতাকে হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ তিন দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি ডেকেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রোববার বিকেল ৪টায় তিনি রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসংলগ্ন সাকুরা রেস্টুরেন্টের সামনে উপস্থিত হন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগেই বিকেল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রতিনিধি এসে দাবিসংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে গেলে, পরে আর পদযাত্রা করার প্রয়োজন হয়নি। তবে এ সময় সাকুরা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে শতাধিক পুলিশকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে (সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই কলঙ্কিত দিনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ তিন দফা দাবি করেছেন সোহেল তাজ। বাকি দুটি দাবি হচ্ছে—১০ এপ্রিল ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে এবং জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সোহেল তাজ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাকুরা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে শতাধিক পুলিশকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাকুরা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে শতাধিক পুলিশকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সোহেল তাজ বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, যে দেশে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি থাকবে না। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে তরুণেরা যে দাবি নিয়ে এসেছেন, সেটা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। আজকে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে বিনির্মাণ করতে চাচ্ছে। তবে দুর্ভাগ্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। যার কারণে বাংলাদেশকে ধ্বংসের পথে বারংবার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালে তরুণদের আত্মাহুতির মাধ্যমে আরেকটা সুযোগ পেয়েছি, বাংলাদেশকে বিনির্মাণ করার। মুক্তিযুদ্ধে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাঁদের অবদান তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারলে, তাঁরা অনুপ্রাণিত হবে। অনুপ্রেরণা দিয়েই আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব।’

আজকের পদযাত্রা শেষ পদযাত্রা উল্লেখ করে সোহেল তাজ বলেন, ‘আজকের এই পদযাত্রা আমার শেষ পদযাত্রা। ব্যক্তিগতভাবে আমি লজ্জিত। আমার পথে নামতে হচ্ছে এই দাবিগুলো নিয়ে। এটা রাষ্ট্রের বাস্তবায়ন করার কথা।’ তিনি বলেন, ‘কোনো পরিবার বা আমার পিতার জন্য এই আন্দোলন না। এই পদযাত্রা করেছি বাংলাদেশকে ভালোবেসে। আমি চাই আমার সন্তান, আপনাদের সন্তান যেন সুন্দর বাংলাদেশ পায়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত