ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলে অনাবাসিক ও আবাসিক ছাত্রীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে যেকোনো হলে প্রবেশের সুযোগ এবং হলে প্রবেশের সময়সীমা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে হল ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা। আজ শনিবার দুপুরে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। 

তাঁদের অন্য দাবিগুলো হলো হলের খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধি ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার স্থাপন; শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হল প্রশাসনের সদাচরণ নিশ্চিত ও হলের কর্মচারীদের হয়রানিমূলক আচরণ বন্ধ করা; হলে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া; হলের গেস্টরুম সকাল ৮ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা; দূরের হলগুলোতে যাতায়াতের জন্য বাসের ট্রিপ ও সময়সীমা বৃদ্ধি করা এবং ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য সঠিক রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা। 

উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঢাবিতে বর্তমানে পাঁচটি মেয়েদের হলেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অসংগতি ও অনিয়ম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাঁদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, হলের ক্যানটিনে বেশি দামে নিকৃষ্ট মানের খাবার পরিবেশন, চাহিদার তুলনায় বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারের অপ্রতুলতা, হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং মেয়েদের হলগুলোতে প্রবেশে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যা কার্যত শিক্ষার্থীদের তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। আমরা এসব অসংগতি ও অনিয়মের অবসান চাই। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ, অধিকার ও সমস্যার কথা বিবেচনা করে দাবিগুলো বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করা হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সভাপতি খাদিজা আখতার ঊর্মি, সাধারণ সম্পাদক নুসরাত রুবাইয়াত নীলা, রোকেয়া হল সভাপতি আতিকা বিনতে হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অন্তরা দাস পৃথা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখি, সাধারণ সম্পাদক সানজিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সভাপতি রাজিয়া সুলতানা কথা, সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল হাওয়া আঁখি, কবি সুফিয়া কামাল হল সভাপতি পূজা কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক রিমা আক্তার ডলি (লাবিসা)। 

সানজিনা ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে আলাপ করেছি। আমাদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। পাশাপাশি হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’ 

সানজিনা আরও বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোও যৌক্তিক। যে বা যারা করুক, আমরা চাই সমস্যাগুলোর সমাধান হোক। তাদের দাবির প্রতিও আমাদের সমর্থন রয়েছে।’

এদিকে এক হলের নারী শিক্ষার্থীদের অন্য হলে প্রবেশ, ফার্মেসি সুবিধা, খাবার মান বৃদ্ধি ও মনিটরিং, হলের কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য কমানো, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা ও অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া নাম এন্ট্রির মাধ্যমে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত লেট গেট দিয়ে প্রবেশের সুবিধা—এই ছয় দফা দাবিতে রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আসছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণার ব্যাপারে জানতে চাইলে সানজিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘ওদের বিষয়টা জানা নেই। আমরা হলের সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এই আট দফা দাবিগুলো নিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।’ 

সার্বিক বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রী হলের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি দিয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাবিগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’