নরসিংদীর রায়পুরায় প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সুমন মিয়া মারা গেছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী (তালা প্রতীক) সুমন মিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী (চশমা প্রতীক) আবিদ হাসান রুবেলের সমর্থকেরা সকাল থেকে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। দুপুরে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের মামদের কান্দি এলাকায় উভয় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা মুখোমুখি হন। তখন তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় সুমন মিয়া ও আবিদ হাসান রুবেল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তালা প্রতীকের প্রার্থী মো সুমন মিয়াকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তখন আহত অবস্থা তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘সুমন মিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারপরও সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সকল ডাক্তার মিলে মৃত ঘোষণা করি। তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরে পুলিশকে খবর দেই।’ 

নিহতের ভাই আজহারুল ইসলাম টিটু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন মারধর করেছে এবং গুলি ছুড়েছে। ভাইকে প্রতিপক্ষের লোকজন অনেক মেরেছে।’ আমি ভাইর সঙ্গে ছিলাম। ভাই (সুমন) বলেন, ‘ভাই আমি শেষ আপনি বাঁচেন। আমি হত্যার বিচার চাই।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘পাড়াতলী ইউনিয়নে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তবে দুপুরে তেমন কোনো বড় ঘটনা ছিল না। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হয়েছেন।’ 

রায়পুরা থানার ওসি মো. সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, ‘ঘটনা শুনে পাড়াতলী ইউনিয়নে ফোর্স নিয়ে যাই। তবে ঘটনা সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।’ 

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম বলেন, ‘দুপুরে চরাঞ্চলে উভয় প্রার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় তালা প্রতীকের প্রার্থী মো সুমন মিয়ার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে তার লোকজন উদ্ধার করে তাকে সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক সুরতহালে মৃত্যুর কারণ বুঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’ 

আগামী ২৯ মে ৩য় ধাপের এই উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।