নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে মুক্তিযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ১৭
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৪৯

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল মণ্ডল। আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নির্যাতিত রামপাল ও মোংলাবাসীর পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। 

লিখিত বক্তব্যে কেশব লাল বলেন, ‘৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনার পর থেকেই বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) আসনে, বিশেষ করে পুরো মোংলা উপজেলায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহারের সশস্ত্র ক্যাডাররা ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করেছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহারের কতিপয় নেতা ও ক্যাডার বাহিনীর ধারাবাহিক জুলুম, অত্যাচার, হামলা, মারধর, দখল, ভাঙচুর ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিপুলসংখ্যক হিন্দু পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে বন্দী জীবন যাপন করছে। ইতিমধ্যে কয়েক শ পরিবার ভীতিসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে মোংলা থেকে পালিয়ে অন্যত্র বসবাস করছে। শুধু হাবিবুন নাহারকে ভোট না দেওয়ার কারণে এলাকায় এ ধরনের অস্থিতিশীল ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনে এই আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় হাবিবুন নাহার অনেক সহজেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার দলীয় কোনো বাধা না থাকায় বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মোংলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হয়। নির্বাচনের শুরু থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের সমর্থক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মী ও নেতাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।’ 

বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল বলেন, ‘ভোট গণনা শেষ হতেই সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালায়। বসতঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানে ভাঙচুর করে। মাছের ঘের জবর দখল করে ঘেরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাড়ির শিশু ও বৃদ্ধ নারীরা। এমনকি তাদের হাতে দুজন মুক্তিযোদ্ধাও মারাত্মক আহত হয়েছেন।’ 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা, মিঠাখালী, সুন্দরবন ও চিলা ইউনিয়নে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালিয়েছে। এসব তাণ্ডবের নেপথ্যে রয়েছে মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, সুন্দরবন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেন ও তাঁর সহযোগী আহাদুল মেম্বার, মিঠাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ইস্রাফিল হাওলাদার, চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, চাঁদপাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাই হাফিজুল ও তাঁর সহযোগী সেলিম। 

‘তাঁরা ধারাবাহিকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর নির্যাতন ও জুলুম চালালেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কারণে আমরা নিরুপায় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ওই সব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দলীয়ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’ 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাল্টা অভিযোগ করেন সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার। তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকজনও আহত হয়েছে। তারাও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খুলনা হাসপাতালেও ভর্তি আছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমার নিজের কর্মী-সমর্থক আছে। আমি কোনো বিএনপি-জামায়াতকে আমার দলে ডাকিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে আর‍ও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বিধান চন্দ্র রায়, মিঠাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মণ্ডল, বুড়িরভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, ইউপি সদস্য আশীষ মণ্ডল, নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য পিন্টু রায়, নয়ন কুমার মণ্ডল, সঞ্জয় বাছার, নির্মল সরকার, দেবাশীষ মণ্ডল, তপন ফকির, দীপা ফকির, তাপস সরকার, বিবেক মণ্ডল, অমিত সরকার প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত