খিলক্ষেতে হোস্টেল থেকে নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার

ঢামেক প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ৪২

রাজধানীর খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকার একটি হোস্টেল থেকে মাহফুজা আক্তার (২৫) নামের এক চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে খিলক্ষেত থানা-পুলিশ নিকুঞ্জ-২ এর ৩ নম্বর রোডের-২৬ নম্বর বাড়ির ৬ষ্ঠ তলা থেকে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। 

নিহতের বাড়ি গাজীপুর জেলায়। তাঁর বাবার নাম নুর আহমেদ খান ও মা রওশন আরা। তাঁর পরিবার রাজধানীর কদমতলী মুরাদপুর এলাকায় থাকেন। 

খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাবরিনা রহমান মৌরী জানান, খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় নিকুঞ্জ-২ এর একটি হোস্টেলের ৬ষ্ঠ তলার রুমের ভেতর থেকে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মরদেহটি বিছানায় শায়িত অবস্থায় ছিল। 

এসআই আরও জানান, ওই ভবনটি ব্যক্তিমালিকানাধীন। তবে ভবনটির মালিক এটি হোস্টেল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মাহফুজা আক্তার ওই হোস্টেলের কক্ষটিতে ভাড়া থাকেন। তাঁর কক্ষে আরও একজন থাকে। তবে গতকাল সে গ্রামের বাড়িতে ছিল। 

আশপাশের ভাড়াটিয়াদের বরাত দিয়ে এসআই সাবরিনা বলেন, গতকাল দুপুরের পরে পাশের রুমের বাসিন্দারা মাহফুজার রুমের ভেতর থেকে ফোনে চিল্লাচিল্লি করার শব্দ শুনতে পান। এরপর বিকেলে তাঁর রুমের দরজা বন্ধ দেখে আশপাশের রুমমেটরা তাঁকে ডাকাডাকি করে। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানালে তখন সবাই মিলে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লোহার হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে নিজেরাই ঝুলন্ত অবস্থা থেকে বিছানায় নামিয়ে আনেন। এরপর থানায় খবর দেয়। 

গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে সে রুমের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে বলে জানান এসআই সাবরিনা। 

মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে এসআই উল্লেখ করেন, মৃত মাহফুজার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। 

এসআই সাবরিনা রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আমাদের কাছে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। আমরা মাহফুজার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরাও তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে পারেনি। কেন তিনি আত্মহত্যা করেছে সে বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারছেন না। তাঁরা বলছেন মাহফুজা খুব শান্তশিষ্ট ও নরম স্বভাবের ছিল। কারও সঙ্গে তেমন বেশি কথা বলত না। খুবই মেধাবী ছিলেন তিনি। সবাই তাঁকে ভালো জানত। 

মৃত মাহফুজার ভাই মেহেদি হাসান মুন্না জানান, ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাশ করেছে মাহফুজা। এরপর সে টঙ্গীতে একটি গার্মেন্টসের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল। পাশাপাশি তিনি এফসিপিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর আগেও সে দু-তিনবার পরীক্ষা দিয়েছে। নিকুঞ্জ এলাকার ওই হোস্টেলে থেকে কোচিং করছিল সে। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। কী কারণে সে গলায় ফাঁস দিতে পারে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত