ট্যাঙ্ক-কামানে চড়লেন ছেলে-বুড়ো সবাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

এ পাশে ট্যাঙ্ক-কামান তো ওদিকে যুদ্ধজাহাজ-জঙ্গিবিমান। শিশু-কিশোররা একবার এদিকে ছুটছে তো পরক্ষণেই ওদিকে। কোনোটা ছুঁয়ে দেখছে, কোনোটিতে চড়ে বসছে। শুধু ছোটরাই বা কেন, বয়স্করাও সমান উৎসাহী। সবাই মিলে ঘুরে ঘুরে দেখছেন অস্ত্র-গোলাবারুদ আর সামরিক যান।  স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজন করা হয়েছে সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী আর বিমানবাহিনীর সব যুদ্ধ সরঞ্জাম সেখানে রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য। সামরিক জীবনকে কাছ থেকে দেখতে আগ্রহ নিয়ে জড়ো হচ্ছে শিশু, কিশোর, তরুণসহ সব বয়সের সাধারণ মানুষ। যুদ্ধবিমান বা ট্যাঙ্কের ভেতরটাও মানুষকে দেখিয়ে-বুঝিয়ে দিচ্ছেন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

স্বাধীনতা দিবসে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সবার জন্য খোলা থাকবে।

গতকাল ছুটির দিন হওয়ায় শিশুদের নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন অনেকেই। মিরপুরের বাসিন্দা শামসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অন্য দিন তো সময় পাওয়া যায় না। আজকে ছুটির দিন তাই বাচ্চাকে দেখাতে নিয়ে এসেছি।’

দুই সন্তানকে সামরিক সরঞ্জামাদি দেখাতে নিয়ে এসেছিলেন আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা খালেদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘এখন ওদের শেখার বয়স। এখানে দেখে শিখবে, ভবিষ্যতে বড় কিছু করবে এই আশায় নিয়ে এসেছি। এসে ওরা অনেক খুশি।’

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী আর বিমানবাহিনীর সব যুদ্ধ সরঞ্জাম রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য।প্রদর্শনীতে নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন শাখা নিজেদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি আলাদাভাবে প্যাভিলিয়ন করে তুলে ধরেছেন। সাঁজোয়া স্টলে ৬টি কামান রাখা হয়েছে। এখানে কয়েকটি কামানের ভেতরেও দেখাচ্ছেন বাহিনীর সদস্যরা। আর্মি অ্যাভিয়েশন গ্রুপের বিশেষ আকর্ষণ ড্রোনের মাধ্যমে পরিচালিত বিশেষ হেলিকপ্টার ‘ইউএভি’। ফিল্ড আর্টিলারির প্যাভিলিয়নে রয়েছে মিসাইল ট্যাঙ্কসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি।

প্রত্যেকটি সরঞ্জামের সামনেই একজন করে সামরিক বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। তাঁরা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম ও অস্ত্রের ব্যবহারসহ বিস্তারিত জানাচ্ছেন। এ ছাড়া এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি, প্যারা কমান্ডো, বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা, রেডিও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি, সিগন্যালস ইউনিট, মোবাইল ফিল্ড হাসপাতাল, আর্মি সার্ভিস কোরসহ তিন বাহিনীর সব শাখার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে প্রদর্শনীতে।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী আর বিমানবাহিনীর সব যুদ্ধ সরঞ্জাম রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য।বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীরা এসেছিল দলবেঁধে। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ৭৫ জন আসে একসঙ্গে। তাদের একজন মো. আশরাফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে এসে নতুন অনেক কিছু জানতে পেরেছি। বাহিনীগুলোর অস্ত্র, সরঞ্জাম এত কাছ থেকে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। আমাদের বিমানবাহিনী যে নিজেরাই বিমান তৈরি করে, তা এখানে না এলে জানতাম না।’

প্রদর্শনীতে বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর ভিন্ন ভিন্ন ভর্তি ও তথ্য কেন্দ্র রয়েছে। সিএমএইচের তত্ত্বাবধানে রয়েছে চিকিৎসা কেন্দ্র। পুরো সময় দেশাত্মবোধক বিভিন্ন গানের সুর বাজিয়ে প্রদর্শনী স্থলে সুরের আবহ ধরে রেখেছে সশস্ত্রবাহিনী ব্যান্ড দল ও অর্কেস্ট্রা দল।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী আর বিমানবাহিনীর সব যুদ্ধ সরঞ্জাম রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের দেখার জন্য।প্রদর্শনীতে আসা বিমানবাহিনীর ফ্লাইং অফিসার মো. হুসাইন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিফেন্স সেক্টরে যে উন্নতি করছে, তারই কিছুটা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা দেশের সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই, যাইহোক আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করতে যথাসাধ্য সক্ষম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত