মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত, লাশের অপেক্ষায় স্বজনেরা 

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। বাসা থেকে বাইসাইকেলে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টার দিকে মালয়েশিয়ার ইপোহ রাজ্যের পেরাক শহরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে মাতম।

নিহত প্রবাসী শ্রমিকের নাম আরমান আলী (৪৭)। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রাশেদের ছেলে। তিনি ২০ বছর ধরে মালয়েশিয়ার পেরাক শহরে থেকে স্থানীয় একটি কেমিক্যাল কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।

আজ তাঁর বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বৃদ্ধা মা মানিক জান ছেলের শোকে কাতর। একটু পর পর কাঁদছেন আর মোবাইল ফোনে ছেলের ছবি দেখে বার বার চুমু খাচ্ছেন। বাড়িতে যত লোকজন আসছেন, সবার কাছে জানতে চাচ্ছেন কখন তাঁর ছেলে আসবে।

নিহতের স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমার স্বামী মালয়েশিয়া থাকেন। সোমবার সকাল ৮টার দিকে স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এরপর কাজে যাবেন বলে ফোন কেটে দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে স্বামীর মোবাইল ফোনে কল দিলেও কোনো খবর পাচ্ছি না। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর বন্ধু ফোন করে জানান, আমার স্বামী মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। স্বামীর বন্ধু আরও জানান, বাসা থেকে বাইসাইকেলে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে মালয়েশিয়ার পেরাক শহরে একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় তিনি মারা যান।’

sripur-2তিনি আরও বলেন, ছয় বছর আগে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন তাঁর স্বামী। সামনের রমজান মাসে দেশে আসার সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেল। ১৩ বছরের ছেলে সাঈমকে নিয়ে এখন তাঁর সংসার। স্বামীর লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।

নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহিম বলেন, ‘ভাইয়ের উপার্জিত অর্থ দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। হঠাৎ মৃত্যুর খবর শোনার পর সবকিছু যেন অন্ধকার হয়ে গেল। বহু বছর ভাইকে দেখি না। আসছে রমজানে দেশে আসবে বলে জানিয়েছিল। আর আসা হলো ভাইয়ের। কথা হলো না ভাইয়ের সঙ্গে। এখন ভাইয়ের লাশের অপেক্ষায়।’

sripur-3মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিক আরমান আলী আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া থেকে মৃত্যু নিশ্চিত খবরটি জানানোর পর পরিবারের সদস্যরা আমাকে অবহিত করেছেন। মরদেহ দেশে আনতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত