অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পোশাকশ্রমিকদের ১১ দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ০২
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ২৬

শ্রমিক স্বার্থের পক্ষের প্রকৃত প্রতিনিধি নিয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ড নতুন করে গঠনসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে পোশাকশ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার এসব দাবি তুলে ধরেন। 

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পোশাকশ্রমিকের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন তিনি। 

সভায় আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক সংহতির সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সম্পাদক রাজু আহমেদ, গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, পোশাকশ্রমিক আকলিমা আক্তার, বিআইজিডির গবেষক মাহীন সুলতান, বুয়েটের অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, অভিনেতা ও নাট্যকর্মী ঋতু সাত্তার, আলোকচিত্রী আমিরুল রাজীব প্রমুখ। 

সভায় বক্তারা বলেন, বিগত সময়ে স্বৈরশাসকের নজরদারি সবচেয়ে বেশি ছিল শ্রমিকের ওপর। শ্রমিকেরা যাতে আন্দোলন না করতে পারে সে জন্য সব আয়োজন ছিল। ২০২৩-এর মজুরি আন্দোলনে শুধু আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে শত শত শ্রমিক, শ্রমিকনেতা গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। তাই বাক্স্বাধীনতা ও সংগঠনের অধিকারের এমন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা দরকার যাতে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে শ্রমিকেরা কথা বলতে পারে এবং দাবিদাওয়া নিয়ে সংগঠিত হতে পারে। 

বক্তারা দ্রুত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা দমনমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষা খাতে শ্রমিকদের বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানান তাঁরা। বক্তারা বলেন, নতুন এই বাংলাদেশ নতুনভাবে গড়তে হবে। প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। 

সভায় ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে তাসলিমা আখতার বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ গার্মেন্টস শ্রমিক শুভ শীল ও ছয় শ্রমিকসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। ২০২৩ মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে চার শ্রমিক হত্যার বিচার ও শ্রমিকদের ওপর করা দমনমূলক সব মিথ্যা মামলা নির্বাহী আদেশে প্রত্যাহার করতে হবে। 

তিনি শ্রমিকদের প্রকৃত প্রতিনিধি নিয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ডকে পুনর্গঠন ও ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরি পুনর্বিবেচনা করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ; পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবীদের রেশনিং দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ; শ্রমিকদের সংগঠন, ইউনিয়ন, মিছিল-মিটিং-সভা করার অধিকার এবং মতপ্রকাশে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা এবং সব কারখানায় যৌন নিপীড়নবিরোধী অভিযোগ সেল গঠন; কলকারখানা পরিদর্শন দপ্তর এবং বিজিএমইএসহ এই খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান। 

এ ছাড়া গার্মেন্টস শ্রমিকদের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, সন্তানদের শিক্ষার পাশাপাশি শ্রমিকদের অবসর ভাতা নিশ্চিতকরণ; মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপূরণের আইন প্রণয়ন; মালিকদের পাশাপাশি বায়ারদের জবাবদিহি নিশ্চিতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ; হয়রানিমূলক কালো তালিকা করা বন্ধ এবং শ্রম দপ্তরের তদারকিতে শ্রমিকদের ডেটাবেইস হালনাগাদ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত