আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা
‘আর ভালো লাগে না। কুড়ি বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিতে দিতে আমি ক্লান্ত, মামলা শেষ হয় না। একটি মিথ্যা ডাকাতি মামলার আসামি আমি। এটি লজ্জার। তারপরও মামলার রায় হয়ে গেলে যা হয় হবে। কিন্তু রায় হচ্ছে না। আর কতকাল হাজিরা দিতে হবে কে জানে?’
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বিচারাধীন মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে আদালতের বারান্দায় আজকের পত্রিকাকে এ কথাগুলো বলেন রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটে বসবাসকারী মো. মনির। তিনি জানান, মামলায় যখন তাঁকে আসামি করা হয় তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৪, এখন ৫৪। এই বয়সে ছেলে-মেয়েদের সামনে আদালতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হওয়া লজ্জাজনক।
ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আড়ংয়ের লজিস্টিক কর্মকর্তা খন্দকার আশরাফ হোসেন ২০০৩ সালের ১১ নভেম্বর গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাখালী স্কুল রোডের একটি চারতলা বাড়িতে ব্র্যাক-আড়ং লেদার ফ্যাক্টরিতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা করে। তারা অস্ত্রের মুখে ৩৭ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় তারা ফ্যাক্টরির ইনচার্জ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনসহ কর্মচারীদের মামলা না করার জন্য হুমকি দিয়ে যান।
ওই মামলায় স্থানীয় টিটু, মনির ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলার চার্জশিট থেকে দেখা যায়, মামলার তদন্তকালে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। মামলাটি তদন্ত করেন গোয়েন্দা পুলিশের ডিবি পরিদর্শক মকফুবার রহমান। তদন্ত কর্মকর্তা ২৫ সালের ১৯ অক্টোবর আসামি মনির ও তাজ উদ্দিন আহমেদ টিটুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নথি থেকে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ১৪ বছরে এই মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। এরপর আর কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি।
মামলার নথি থেকে আরও দেখা যায়, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য শুধু তারিখের পর তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাকি সাক্ষীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হচ্ছে। কিন্তু সাক্ষী হাজির হচ্ছেন না। এমনকি সাক্ষীদের ঠিকানা সংশ্লিষ্ট থানা থেকে সাক্ষীদের অবস্থান সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদনও দাখিল করা হচ্ছে না।
ওই আদালতের বিশেষ পিপি ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া টিপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার প্রতি ধার্য তারিখে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আদালত সাক্ষীদের প্রতি অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ সাক্ষীদের হাজির করে না। থানা-পুলিশ সাক্ষীদের অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানায় না। এই কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে মামলাটির দ্রুত শেষ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মামলার নথি থেকে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলের বাড়ির মালিক আদালতের সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন এ ধরনের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না এবং কাউকে কোনো মালামাল লুণ্ঠন করতেও তিনি দেখেন নাই।
এই মামলাটি যে মিথ্যা তার প্রমাণ মামলার নথিতেই প্রমাণ আছে বলে জানিয়েছেন মনিরের আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, মামলার এজাহার অনুযায়ী ঘটনার সময় সকাল সাড়ে ১০টা। ঘটনাস্থল একটি ভবনের চারতলায়। ভবনের অন্যান্য তলায় লোকজন বসবাস করে। ওই ভবনে বাড়িওয়ালাও থাকেন। অথচ একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে যা কেউ জানে না।’
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, ঘটনার কয়েক দিন পর লুণ্ঠিত মালামাল পরিত্যক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলের পাশের একটি ফাঁকা জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে মামলার নথিপত্রে দেখা যায়। ডাকাতি হলে সেই মালামাল ফাঁকা মাঠে পরিত্যক্ত অবস্থায় কয়েক দিন পড়ে থাকবে এটা বিশ্বাসযোগ্য কি না? এ থেকে স্পষ্ট হয় যে এটি একটি সাজানো মামলা। তারপরও মামলা ২০ বছর ধরে চলবে এটা তো হতে পারে না।’
কেন এই মামলা
মনির এ প্রসঙ্গে জানান, তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ভবনের নিচে তাঁর ভাঙারি (পুরোনো প্লাস্টিক, লোহালক্কড়ের) দোকান ছিল। এটা দিয়েই তিনি সংসার চালাতেন। ওই দোকান সরানোর জন্য ব্র্যাক-আড়ংয়ের কারখানার কর্মকর্তারা তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়। কেন তাঁর ভাঙারি দোকান সরানোর জন্য চাপ দিচ্ছিল সে প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর দোকান নাকি ভবনের পরিবেশ নষ্ট করছিল।
‘আর ভালো লাগে না। কুড়ি বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিতে দিতে আমি ক্লান্ত, মামলা শেষ হয় না। একটি মিথ্যা ডাকাতি মামলার আসামি আমি। এটি লজ্জার। তারপরও মামলার রায় হয়ে গেলে যা হয় হবে। কিন্তু রায় হচ্ছে না। আর কতকাল হাজিরা দিতে হবে কে জানে?’
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বিচারাধীন মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে আদালতের বারান্দায় আজকের পত্রিকাকে এ কথাগুলো বলেন রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটে বসবাসকারী মো. মনির। তিনি জানান, মামলায় যখন তাঁকে আসামি করা হয় তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৪, এখন ৫৪। এই বয়সে ছেলে-মেয়েদের সামনে আদালতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হওয়া লজ্জাজনক।
ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আড়ংয়ের লজিস্টিক কর্মকর্তা খন্দকার আশরাফ হোসেন ২০০৩ সালের ১১ নভেম্বর গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাখালী স্কুল রোডের একটি চারতলা বাড়িতে ব্র্যাক-আড়ং লেদার ফ্যাক্টরিতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা করে। তারা অস্ত্রের মুখে ৩৭ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় তারা ফ্যাক্টরির ইনচার্জ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনসহ কর্মচারীদের মামলা না করার জন্য হুমকি দিয়ে যান।
ওই মামলায় স্থানীয় টিটু, মনির ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলার চার্জশিট থেকে দেখা যায়, মামলার তদন্তকালে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। মামলাটি তদন্ত করেন গোয়েন্দা পুলিশের ডিবি পরিদর্শক মকফুবার রহমান। তদন্ত কর্মকর্তা ২৫ সালের ১৯ অক্টোবর আসামি মনির ও তাজ উদ্দিন আহমেদ টিটুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নথি থেকে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ১৪ বছরে এই মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। এরপর আর কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি।
মামলার নথি থেকে আরও দেখা যায়, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য শুধু তারিখের পর তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাকি সাক্ষীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হচ্ছে। কিন্তু সাক্ষী হাজির হচ্ছেন না। এমনকি সাক্ষীদের ঠিকানা সংশ্লিষ্ট থানা থেকে সাক্ষীদের অবস্থান সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদনও দাখিল করা হচ্ছে না।
ওই আদালতের বিশেষ পিপি ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া টিপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার প্রতি ধার্য তারিখে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আদালত সাক্ষীদের প্রতি অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ সাক্ষীদের হাজির করে না। থানা-পুলিশ সাক্ষীদের অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানায় না। এই কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে মামলাটির দ্রুত শেষ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মামলার নথি থেকে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলের বাড়ির মালিক আদালতের সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন এ ধরনের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না এবং কাউকে কোনো মালামাল লুণ্ঠন করতেও তিনি দেখেন নাই।
এই মামলাটি যে মিথ্যা তার প্রমাণ মামলার নথিতেই প্রমাণ আছে বলে জানিয়েছেন মনিরের আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, মামলার এজাহার অনুযায়ী ঘটনার সময় সকাল সাড়ে ১০টা। ঘটনাস্থল একটি ভবনের চারতলায়। ভবনের অন্যান্য তলায় লোকজন বসবাস করে। ওই ভবনে বাড়িওয়ালাও থাকেন। অথচ একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে যা কেউ জানে না।’
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, ঘটনার কয়েক দিন পর লুণ্ঠিত মালামাল পরিত্যক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলের পাশের একটি ফাঁকা জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে মামলার নথিপত্রে দেখা যায়। ডাকাতি হলে সেই মালামাল ফাঁকা মাঠে পরিত্যক্ত অবস্থায় কয়েক দিন পড়ে থাকবে এটা বিশ্বাসযোগ্য কি না? এ থেকে স্পষ্ট হয় যে এটি একটি সাজানো মামলা। তারপরও মামলা ২০ বছর ধরে চলবে এটা তো হতে পারে না।’
কেন এই মামলা
মনির এ প্রসঙ্গে জানান, তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ভবনের নিচে তাঁর ভাঙারি (পুরোনো প্লাস্টিক, লোহালক্কড়ের) দোকান ছিল। এটা দিয়েই তিনি সংসার চালাতেন। ওই দোকান সরানোর জন্য ব্র্যাক-আড়ংয়ের কারখানার কর্মকর্তারা তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়। কেন তাঁর ভাঙারি দোকান সরানোর জন্য চাপ দিচ্ছিল সে প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর দোকান নাকি ভবনের পরিবেশ নষ্ট করছিল।
লক্ষ্মীপুরে একটি তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও ইসলামি সংগীত সন্ধ্যা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে এই আয়োজন করা হয়েছিল। মাহফিলে জামায়াত নেতাকে প্রধান অতিথি করায় বিএনপি সেটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২৩ মিনিট আগেবগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু ছালেককে হত্যায় মামলায় গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদরের ঘোড়াধাপ বন্দর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৩৭ মিনিট আগেবিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে ছাত্ররা কথা বলছেন, তবে এটি একটি কমিটির মাধ্যমে সম্ভব নয়। এর জন্য সাংবিধানিক বা সংসদের প্রতিনিধি প্রয়োজন। পাশাপাশি, সবার আগে প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন।
১ ঘণ্টা আগেনেত্রকোনার কেন্দুয়ায় দুই সাংবাদিককে জিম্মি করে বেধড়ক মারধরের পর মুক্তিপণ আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাজীপুরে এই ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে সড়কের পাশে তাঁদের ফেলে রেখে যায়।
১ ঘণ্টা আগে