ট্রেন থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ যাত্রী, সাড়ে ১৪ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৩: ০২
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৬: ২৪

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার হলহলিয়া লোহার রেলসেতুতে ধাক্কা লেগে তুলসীগঙ্গা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয় মেহেদী হাসান (১৭) নামে এক কিশোর। ঘটনার সাড়ে ১৪ ঘণ্টা পর আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় তুলসীগঙ্গা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। 

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই কিশোর গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রেলসেতুতে ধাক্কা লেগে নদীতে পড়ে যায়। 

মেহদী হাসানের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার রাজমহল গ্রামে। সে ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সান্তাহার রেলওয়ে থানার (জিআরপি) উপপরিদর্শক (এসআই) সোলাইমান হোসেন নিহত কিশোরের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। 

রেলওয়ে থানা-পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর মেহদী হাসান তার দাদি শাহেরা খাতুনের সঙ্গে পাবনার আটমাইলে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। তারা রোববার নাটোর স্টেশনে এসে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ট্রেনটি জাফরপুর রেলস্টেশন অতিক্রম করে হলহলিয়া রেলসেতুতে ঢুকে পড়ে। এ সময় মেহদী হাসান ট্রেনের দরজা থেকে মাথা বের করে নদী দেখার সময় রেলসেতুতে ধাক্কা খেয়ে সেতুর ওপরে পড়ে ডান হাতের কবজি ছিঁড়ে সেতুর গার্ডারে আটকে থাকে। পরে রেলসেতুর নিচে পড়ে যায় সে। ট্রেনটি রেলসেতু অতিক্রম করার পর স্থানীয় লোকজন রেলসেতুতে এসে হাতের কবজি, ম্যানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দেখতে পান। এরপর তাঁরা ফায়ার সার্ভিস ও থানা-পুলিশকে ঘটনাটি জানান। 

খবর পেয়ে ওই দিন রাতে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসান ও আক্কেলপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা রোববার রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হলহলিয়া রেলসেতুর নিচে তুলসীগঙ্গা নদীর দুই পাশের আধা কিলোমিটার পর্যন্ত খুঁজে তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান শেষ করেন। এরপর রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেন তাঁরা। আজ সোমবার সকালে রাজশাহী ফায়ার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তুলসীগঙ্গা নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। সেখানে মেহেদী হাসানের চাচা আসাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

আক্কেলপুর ফার্য়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে রোববার রাতে আমরা হলহলিয়া রেলসেতুর নিচে তুলসীগঙ্গা নদীতে অভিযান শুরু করেছিলাম। রাত ১০টার পর উদ্ধার অভিযান শেষ করা হয়েছিল। আজ সোমবার সকালে রাজশাহীর ডুবুরি দল এসে তুলসীগঙ্গা নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে।’ 

নিহত মেহদী হাসানের চাচা আসাদ হোসেন বলেন, ‘ভাতিজা মেহদী হাসান দাদির সঙ্গে পাবনা আটমাইলে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে পঞ্চগড় ফেরার পথে হলহলিয়া রেলসেতুতে ধাক্কা লেগে নদীতে পড়ে যায়। আমরা খবর পেয়ে এখানে চলে এসেছি।’ 

সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপপরির্দশক (এসআই) সোলাইমান হোসেন বলেন, ঘটনার প্রায় সাড়ে ১৪ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় ইউডি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত