ফজলুল কবির, ঢাকা
রাজধানীর সড়কগুলোয় গাড়ি চলাচল আগের চেয়ে এখন বেশি থাকলেও সবাইকে একটু সমঝে চলতে হচ্ছে। সাধ্য অনুযায়ী তা করছেও। যতটা যা ভাঙছে, তার পেছনে আছে ক্ষুধা, তথা উপার্জনের সমীকরণ। রাস্তায় বেরোনো রিকশা বা অটোরিকশাগুলোকে অনেক কিছু ডিঙিয়ে সওয়ারি খুঁজতে হচ্ছে। তাদের নিজ ডেরায় পৌঁছে দেওয়াও কম ঝামেলার নয়। এরই মধ্যে দেখা যায়, খাবারসহ বিভিন্ন পার্সেল নিয়ে কিছু তরুণের ছুটেচলা। কখনো সাইকেলে বা মোটরসাইকেলে করে তাঁরা মানুষের কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি তাঁদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন।
লকডাউনের মধ্যে রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া বারণ। তবে খাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথটি খোলা। ঘুরে ঘুরে আসা এমন নির্দেশনায় রেস্তোরাঁ কর্মীদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। অনেককেই ফিরতে হয়েছে গ্রামে। তারপরও যাঁরা রয়ে গেছেন, তাঁদের বিকল্প পেশা খুঁজে নিতে হয়েছে। এখন এই সময়ে বিশেষত বিকেলবেলা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা বা বড় রাস্তার ধারের অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোর সামনে গেলে দেখা যাবে একদল তরুণকে। তাঁরা গৃহবাসীদের কাছ থেকে আসা নানা অর্ডার অনুযায়ী খাবার নিতে জড়ো হয়েছেন। নানা মানুষের নানা চাহিদা অনুযায়ী খাবার তাঁরা নিয়ে যান দরজা থেকে দরজায়। তারপর আবার ছোটেন, তারপর আবার।
এমনই একজন সিয়াম আহসান। থাকেন রাজধানীর মগবাজার এলাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। কিন্তু করোনার কারণে দিনপঞ্জির বছর শেষ হলেও শিক্ষাবর্ষ আর শেষ হচ্ছে না। এদিকে এই বয়সে নিজের চাহিদা মেটাতে ঘরের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়াও বাধছে। চারুকলা শিক্ষার্থী হিসেবে যে কমিশন ওয়ার্কগুলো করতেন, সেগুলোও বন্ধ। মাঝে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ঢুকেছিলেন। কিন্তু রোজার ঈদের আগে দেওয়া লকডাউনের সময় ৪৫ শতাংশ বেতন চুকিয়ে সে প্রতিষ্ঠানও তাঁকে না বলে দেয়। পরবর্তী সময়ে খাবার ডেলিভারির পথই খুঁজে নেন তিনি।
সিয়াম জানালেন, বন্ধুদের দেখেই কাজটি শুরু করেন তিনি। কিন্তু ডেলিভারিপ্রতি আয় অনেক কম। বললেন, ‘আমি ফুডপান্ডার সঙ্গে যুক্ত হই। সেখানে প্রতি ডেলিভারির জন্য ১৭ টাকা করে দেওয়া হতো। টানা চার ঘণ্টা দম ফেলার সময় থাকত না। কিন্তু সে অনুপাতে আয় অনেক কম ছিল।’
মাত্র দেড় মাসের মাথায় কাজ ছাড়েন সিয়াম। অনলাইনে ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে এখন সফটওয়্যার শিখছেন। যাঁদের পারিববারিক অবস্থা এতটা ভালো নয়, তাঁদের তো ওই হোম ডেলিভারির কাজই ভরসা।
এই হোম ডেলিভারি বা অনলাইন বেচাকেনার প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্য দিয়ে কি একটি নতুন শ্রেণি উঠে আসছে সেবা খাতে? আগের শ্রেণিটি কি দিন স্বাভাবিক হলে ফিরতে পারবে নিজ কর্মক্ষেত্রে? এক শ্রেণির জন্য যা উপায় হিসেবে হাজির হচ্ছে, তা অন্য শ্রেণিকে নিরুপায় করে দিচ্ছে? প্রশ্নগুলো নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা নিশ্চয় ভাববেন। তবে সিয়াম এমন সম্ভাবনাকে কিছুটা উড়িয়েই দিলেন। তাঁর মতে, কোম্পানিগুলো প্রতি ডেলিভারিতে যে কম টাকা দেয়, তাতে এই পেশায় শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক সময়ে থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে।
এ তো স্বাভাবিক সময়ের কথা। তার আগ পর্যন্ত এই আশা-নিরাশার কালে এটিই তো নিরুপায়ের খড়কুটো হয়ে থাকছে।
আরও পড়ুন
রাজধানীর সড়কগুলোয় গাড়ি চলাচল আগের চেয়ে এখন বেশি থাকলেও সবাইকে একটু সমঝে চলতে হচ্ছে। সাধ্য অনুযায়ী তা করছেও। যতটা যা ভাঙছে, তার পেছনে আছে ক্ষুধা, তথা উপার্জনের সমীকরণ। রাস্তায় বেরোনো রিকশা বা অটোরিকশাগুলোকে অনেক কিছু ডিঙিয়ে সওয়ারি খুঁজতে হচ্ছে। তাদের নিজ ডেরায় পৌঁছে দেওয়াও কম ঝামেলার নয়। এরই মধ্যে দেখা যায়, খাবারসহ বিভিন্ন পার্সেল নিয়ে কিছু তরুণের ছুটেচলা। কখনো সাইকেলে বা মোটরসাইকেলে করে তাঁরা মানুষের কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি তাঁদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন।
লকডাউনের মধ্যে রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া বারণ। তবে খাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথটি খোলা। ঘুরে ঘুরে আসা এমন নির্দেশনায় রেস্তোরাঁ কর্মীদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। অনেককেই ফিরতে হয়েছে গ্রামে। তারপরও যাঁরা রয়ে গেছেন, তাঁদের বিকল্প পেশা খুঁজে নিতে হয়েছে। এখন এই সময়ে বিশেষত বিকেলবেলা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা বা বড় রাস্তার ধারের অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোর সামনে গেলে দেখা যাবে একদল তরুণকে। তাঁরা গৃহবাসীদের কাছ থেকে আসা নানা অর্ডার অনুযায়ী খাবার নিতে জড়ো হয়েছেন। নানা মানুষের নানা চাহিদা অনুযায়ী খাবার তাঁরা নিয়ে যান দরজা থেকে দরজায়। তারপর আবার ছোটেন, তারপর আবার।
এমনই একজন সিয়াম আহসান। থাকেন রাজধানীর মগবাজার এলাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। কিন্তু করোনার কারণে দিনপঞ্জির বছর শেষ হলেও শিক্ষাবর্ষ আর শেষ হচ্ছে না। এদিকে এই বয়সে নিজের চাহিদা মেটাতে ঘরের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়াও বাধছে। চারুকলা শিক্ষার্থী হিসেবে যে কমিশন ওয়ার্কগুলো করতেন, সেগুলোও বন্ধ। মাঝে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ঢুকেছিলেন। কিন্তু রোজার ঈদের আগে দেওয়া লকডাউনের সময় ৪৫ শতাংশ বেতন চুকিয়ে সে প্রতিষ্ঠানও তাঁকে না বলে দেয়। পরবর্তী সময়ে খাবার ডেলিভারির পথই খুঁজে নেন তিনি।
সিয়াম জানালেন, বন্ধুদের দেখেই কাজটি শুরু করেন তিনি। কিন্তু ডেলিভারিপ্রতি আয় অনেক কম। বললেন, ‘আমি ফুডপান্ডার সঙ্গে যুক্ত হই। সেখানে প্রতি ডেলিভারির জন্য ১৭ টাকা করে দেওয়া হতো। টানা চার ঘণ্টা দম ফেলার সময় থাকত না। কিন্তু সে অনুপাতে আয় অনেক কম ছিল।’
মাত্র দেড় মাসের মাথায় কাজ ছাড়েন সিয়াম। অনলাইনে ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে এখন সফটওয়্যার শিখছেন। যাঁদের পারিববারিক অবস্থা এতটা ভালো নয়, তাঁদের তো ওই হোম ডেলিভারির কাজই ভরসা।
এই হোম ডেলিভারি বা অনলাইন বেচাকেনার প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্য দিয়ে কি একটি নতুন শ্রেণি উঠে আসছে সেবা খাতে? আগের শ্রেণিটি কি দিন স্বাভাবিক হলে ফিরতে পারবে নিজ কর্মক্ষেত্রে? এক শ্রেণির জন্য যা উপায় হিসেবে হাজির হচ্ছে, তা অন্য শ্রেণিকে নিরুপায় করে দিচ্ছে? প্রশ্নগুলো নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা নিশ্চয় ভাববেন। তবে সিয়াম এমন সম্ভাবনাকে কিছুটা উড়িয়েই দিলেন। তাঁর মতে, কোম্পানিগুলো প্রতি ডেলিভারিতে যে কম টাকা দেয়, তাতে এই পেশায় শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক সময়ে থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে।
এ তো স্বাভাবিক সময়ের কথা। তার আগ পর্যন্ত এই আশা-নিরাশার কালে এটিই তো নিরুপায়ের খড়কুটো হয়ে থাকছে।
আরও পড়ুন
মূল সড়কে অটোরিকশা চালানোর দাবিতে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় চালকেরা বিক্ষোভ করলে মারধরের শিকার হয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা তাঁদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেন। আজ শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে...
৬ মিনিট আগেকুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ বাড়ছে। বিষমুক্ত এই পদ্ধতিতে ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া চাষাবাদে খরচ কম লাগছে।
১ ঘণ্টা আগেরংপুর বিভাগীয় সনাতনী সমাবেশস্থল পরিবর্তন করা হয়েছে। রংপুর জেলা স্কুল মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন করে শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে মাহীগঞ্জ কলেজ মাঠে আয়োজন করা হচ্ছে...
১ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর অন্যতম ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বলে আখ্যায়িত করেছে ছাত্রদল। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে সোহেল রানাকে হাতুড়িপেটার অভিযোগও অস্বীকার করেছে রাজশাহী নগর ছাত্রদল...
১ ঘণ্টা আগে