বন-জলধারা হারিয়ে ধুঁকছে পাহাড়ের মানুষ: ইউএনডিপির অনুষ্ঠানে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ২২: ২৩

মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে পাহাড়ের বন ও জলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাহাড়ে পানির সংকট বাড়ছে। বন ও জলধারা হারিয়ে ধুঁকছে পাহাড়ের মানুষ। আজ সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত ‘ওয়াটার শেড কো–ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি’ এর দ্বিতীয় পর্যায় (সিএইচটিডব্লিউসিএ-২) এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সব কথা বলেন। 

বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অংশীদারত্বে ইউএনডিপি এবং ইউএসএআইডি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মসিউর রহমান বলেন, ‘পানির প্রাপ্যতা, কৃষি অনুশীলন ও সামাজিক সংহতিতে ইতিবাচক উন্নতি এবং জলাশয় সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণী পাচার রোধে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সাফল্য রয়েছে। যেহেতু আমরা এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনাকালে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, স্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য পানির প্রাপ্যতা আরও বৃদ্ধি করা এবং আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে টেকসই জলাশয় সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া।’ 

সিএইচটিডব্লিউসিএ-২ এর লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তন, অবৈধভাবে গাছ কাটা এবং বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ মোকাবিলা করার পাশাপাশি জলবায়ু-অভিযোজন নির্ভর জীবিকার উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করা। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনায় অংশীজনদের ভেতর সমতা রক্ষা করা। 

ইউএসএআইডির এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই অঞ্চলকে রক্ষায় আমাদের অতীত অর্জনগুলোর মতো নতুন প্রকল্পটিও সফল হবে এবং এখানকার জনগণের জন্য আরও উজ্জ্বল, আরও সহনশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।’ 

বাংলাদেশে ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলমান পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এক দশকের নিবেদিত কার্যক্রমের পর আমাদের এই প্রকল্প নবায়ন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’ 

ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘অতীতের সাফল্যকে পুঁজি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মসূচির ‘ওয়াটার শেড কো–ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি’-দ্বিতীয় পর্যায় এর লক্ষ্য হচ্ছে কমিউনিটি পদ্ধতির মাধ্যমে জলাশয় ব্যবস্থাপনা, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধি করা। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ইউএসএআইডির সহায়তায় ইউএনডিপি জীববৈচিত্র্য, পানির প্রাপ্যতা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং সামাজিক সংহতি উন্নয়নে তার প্রচেষ্টা জোরদার করবে।’ 

রাঙামাটি হিল ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘পাহাড়ের বন-ঝিরি হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা ভুক্তভোগী। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ জলের জন্য হাহাকার করছে। এখনই যদি এই অবস্থা পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে শুধু পাহাড় নয়, চট্টগ্রাম বন্দর এবং চট্টগ্রাম নগরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৷ বন এবং জলধারা পুনরুদ্ধার করতে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম, রাজা দেবাশীষ রায়, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ইকোনমিক গ্রোথ ডিরেক্টর ড. মুহাম্মদ খান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়া রত্নে প্রমুখ। 

আলোচকেরা বনাঞ্চল রক্ষা এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে সংরক্ষিত বনাঞ্চল পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত