নাসির ও অমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন পরীমণি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ৫৪

শ্লীলতাহানি ও মারধরের মামলায় উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক সভাপতি এবং জাতীয় পার্টির নেতা নাসির ইউ মাহমুদ, তাঁর সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন পরীমণি। 

আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এ তিনি সাক্ষ্য দেন।

বিচারক মো. হেমায়েত উদ্দিন জবানবন্দি গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আবার আগামী ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।

পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা সুরভী আজকের পত্রিকাকে বলেন, পরীমণি নিজে হাজির হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে তাঁর জবানবন্দি শেষ হয়নি। 

এর আগে গত ১৮মে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন।

গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক সভাপতি নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) শাহ শহিদুল আলমের নাম না থাকলেও তদন্তের সময় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় পুলিশ অভিযোগপত্রে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করে।

গত বছর ১৪ জুন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসির, অমি এবং আরও চার জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন পরীমণি। ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয় এজাহারে।

সেদিনই উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাসির ও অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা আরও একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

অভিযোগপত্রে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়নি। কিন্তু মারধর ও শ্রীলতাহানি অভিযোগ আনা হয়। 

ট্রাইবুনাল সূত্রে জানা গেছে পরীমণি তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, গত বছর ৮ জুন রাত ১১টা ৩০ মিনিটে পরীমণি তাঁর বাসা হতে তাঁর কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, জিমির বন্ধু অমি ও পরীমণির বোন বনিসহ দুটি গাড়ি যোগে উত্তরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তাঁর দুই মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামত তারা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গত ৯ জুন রাত ১২টা ২০ মিনিটের সময় গাড়ি দাঁড় করান। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোন এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয় তখন অমি ভেতরে যান এবং অনুরোধ করেন পরীমণিদের ভেতরে যেতে। এরইমধ্যে পরীমণির ছোট বোন বনি ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করে। টয়লেট হতে বের হতেই ১ নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ সবাইকপ ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। 

পরীমণি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ নাসির মদ পান করার জন্য জোর করেন। পরীমণি মদ পান করিতে না চাইলে নাসির জোর করে পরীমণির মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে, এতে তিনি সামনের ঠোঁটে আঘাত পান। নাসির পরীমণিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন। জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। নাসির উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে পরীমণির গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন কস্টিউম ডিজাইনার জিমি বাঁধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে জখম করে। এ পর্যায়ে বাকি সব দেওয়ার জন্য পরীমণি সময়ের আবেদন করলে আদালত সবাই মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত