আসিফ মাহতাবকে চাকরিতে বহাল না করলে কর্মসূচির হুমকি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ৪৮
Thumbnail image

নতুন শিক্ষাক্রম সংশোধন ও সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ে শরীফার গল্পকে কেন্দ্র করে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিতে বহাল রাখার দাবি তুলেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার নেতারা। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। 

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে ‘নতুন কারিকুলামে অসঙ্গতি দূরীকরণ, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন, মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রণয়ন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে স্বপদে পুনর্বহালের দাবিতে’ মানববন্ধন করে সংগঠনটি। 

সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইতে শরীফার গল্পে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের গল্প বলতে গিয়ে সেখানে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প বলা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জানাতে গিয়ে তাদের সমকামিতার দিকে ধাবিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ। 

তিনি বক্তব্যে বলেন, আমার মনে হয় ট্রান্সজেন্ডারের যে বিষয়টা সেটা কোনো ধর্মের মানুষই মানবে না। তারাই মানবে যারা পশুর থেকে নিকৃষ্ট অবস্থানে আছে। এই জন্য আমরা চাই এই দেশের মানুষ, মানুষ হয়ে বসবাস করবে। এই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মানুষ হতে পারে, শিক্ষিত ও যোগ্যতাসম্পন হতে পারে। আদর্শ নাগরিক হতে পারে। এটুকুই আমরা চাই, অন্য কিছু নয়। 

আসিফ মাহতাব সাহেব কী চেয়েছেন? এই দেশের মানুষ যেন সমকামিতার প্রশিক্ষণ না পায়। এদেশের মানুষের পক্ষে, এদেশের মানুষের ইচ্ছার পক্ষেই কথা বলেছেন। এজন্য তাকে চাকরিচ্যুত করা মারাত্মক রকম জুলুম, অত্যাচার। এইটা আমরা মানি না। তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ইসলামি আন্দোলনের পক্ষ থেকে কঠিন কর্মসূচি নেওয়া হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি এবিএম জাকারিয়া বলেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আগামী প্রজন্মকে বাঁচানোর জন্য এই মানববন্ধন করছে। 

প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান রইল তারা যেন এই মানববন্ধনের এই বার্তা গ্রহণ করেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল রাহা। নতুন কোনো পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাক্রম প্রণয়নের আগে পর্যাপ্ত গবেষণা ছিল কী-না এমন প্রশ্ন তুলে রাখাল রাহা বলেন, বারবার আমাদের শিক্ষাক্রম বদলাতে হয় কেন? সৃজনশীল থেকে একমুখী সব সময়ই এটা বদলাতে হয়েছে। আর শিক্ষক আসিফ যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সেটা পাঠ্যপুস্তকের দুটি পৃষ্ঠার লেখা নিয়ে দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই লেখাগুলো আমাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও ধর্মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না। তিনি তার ভাষায় একটা প্রতিক্রিয়া করেছেন এবং দুইটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছেন। কথা হলো, এই যে পাঠ্যপুস্তক বানানো হল-এটা কীভাবে বানানো হলো। যে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাক্রম সমাজের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, সেটা নিয়ে কী কোনো গবেষণা নাই তাদের? তাদের জানা-বুঝা নাই? 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অর্থ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. মহসিন ভূঁইয়া, সাবেক সেক্রেটারি মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক আব্দুস সবুর, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদ মাওলানা আব্দুল কাঈয়ুম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসিরউদ্দিন খান, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ইমতিয়াজ আলমসহ আরও অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত