‘বন্দুকযুদ্ধে’ জনি হত্যা: ১৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ০৯
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২: ১০

বন্দুকযুদ্ধে ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনি নিহত হওয়ার ঘটনার সাড়ে সাত বছরেরও বেশি সময় পর সাবেক পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামানসহ ১৫ পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে দায়ের করা মামলা খারিজ করা হয়েছে। 

আজ সোমবার সকালে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন জনির বাবা মো. ইয়াকুব আলী। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা তিনি। বিচারক মো. আছাদুজ্জামান সকালে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং পরে আদেশ দেবে বলে জানান। পরে সন্ধ্যায় দেওয়া আদেশে মামলা খারিজ করে দেন আদালত। 

আদেশে আদালত বলেন, ‘মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেই অভিযোগ আমলে নেওয়ার মতো কোনো উপাদান নেই।’ 

মামলায় আসামি করা হয়েছিল সাবেক পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, উপপুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় (বর্তমানে কমিশনার), সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত ও মোহাম্মদ জাহিদুল হক তালুকদার, পুলিশ পরিদর্শক ফজলুর রহমান, ওহিদুজ্জামান, এস এম শাহরিয়ার হাসান, এসআই দীপক কুমার দাস, শিহাব উদ্দিন, বাহাউদ্দিন ফারুকী, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. আলাউদ্দিন, পুলিশ কনস্টেবল মো. সোলাইমান ও মো. লুৎফর রহমানকে। 

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল এই মামলার বিরোধিতা করেন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘সাড়ে সাত বছরেরও বেশি সময় পরে এই মামলা দায়ের করতে এসেছেন একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে। এখন রাজনৈতিক কারণে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ 

অতিরিক্ত পিপি আরও বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন এই মামলা দায়ের করার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।’ 

বাদীপক্ষের শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধ তামাদি হয় না। যেকোনো সময় মামলা করা যায়।’ 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি বাদীর ছেলে খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের জন্য খিলগাঁও থানার তৎকালীন ওসি ও ডিবি দক্ষিণের এসআই দীপক কুমার দাসের নেতৃত্বে তিন-চারজন ডিবি পুলিশ সদস্য বাদীর বাড়িতে যান। ডিবির উপকমিশনার কৃষ্ণপদ পালের নির্দেশে বাদীর বাড়িতে গিয়ে জনিকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। ওই সময় তাঁরা বলে যান, জনিকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে হীরাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। একই বছরের ১৯ জানুয়ারি সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের সময় নুরুজ্জামান জনি ও তাঁর সহপাঠী মঈন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হীরাকে দেখতে যান। সেখান থেকে আসার পথে ডিবি পরিচয় তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার সময় খিলগাঁও থানা দিন জোড়পুকুর খেলার মাঠে আশপাশের মানুষ নির্যাতনে কান্না ও চিৎকার করা কণ্ঠ শুনতে পায়। পরে বাদী জানতে পারেন তাঁর ছেলে জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তিনি আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং সেখানে গিয়ে দেখেন নুরুজ্জামান জনির বুকের বাঁয়ে ডান দিকে দুই হাতের তালু ও কবজিতে ১৬টি গুলির চিহ্ন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত