‘আমার সন্তানকে ফেরত চাই’, নিখোঁজ ছাত্রদল নেতার বাবার কান্না 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪, ১৬: ২৬
Thumbnail image

ছাত্রদলের নিখোঁজ নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে উদ্ধারে প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁর বাবা আবুল হোসেন সরদার। তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রশাসনের কাছে আমার ছেলেকে উদ্ধারে সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই। আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেবে, এটাই আমার কামনা।’ 
 
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের আবুল হোসেন সরদার এই আহ্বান জানান। আতিকুর রহমান রাসেলের সন্ধান দাবিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

নিখোঁজ সন্তানকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে রাসেলের বাবা আবুল হোসেন সরদার বলেন, ‘আমি জানি না আমার বাবারে কী করেছে। আমার বাবা কোথায় আছে?’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আমার বাবা ১১ দিন যাবৎ কী খায়, কোথায় আছে, কেমন আছে। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। আমি আমার সন্তানকে আমার বুকে ফেরত চাই।’ 

রাসেলের বাবা বলেন, ‘ওর মা নাই। মা-হারা সন্তান আমার। কী অপরাধ আমার বাবার? জীবনে একটা ককটেল মারে নাই, একটা ছুরি হাতে নেয় নাই। কোনো মানুষকে একটা ঢিল মারে নাই। রাজনীতি করে—এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে, আমার বলার কিছু নাই।’ 
 
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাসেলের সন্ধান দাবিতে তাঁর পিতার যে আকুতি আমরা এখানে শুনলাম, এভাবেই বাংলাদেশের আকাশে প্রতিনিয়ত অসংখ্য উল্কাপাত ঘটিয়েছে এই ডামি সরকার, দখলদার সরকারের প্রধানমন্ত্রী। আমরা কোন দেশে বাস করি? এমন একটি দেশ, যেখানে মনে হচ্ছে চারদিকে পাহাড়ের গুহা, সেই পাহাড়ের গুহা থেকে দস্যুদল এসে কোমলমতি ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাবে, তরুণদের ধরে নিয়ে যাবে, নিরুদ্দেশ করে দেবে।’ 

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ আতিকুর রহমান রাসেল নেই আমাদের কাছে। সবাই জানে, তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছে। খবরের কাগজেও এসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরাই তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো তাঁকে হাজির করছে না আদালতে আর না তাঁর পরিবারের কাছে। মা-হারা একটি ছেলে কোথায় খাচ্ছে, কোথায় ঘুমাচ্ছে, কোন জায়গায় শুয়ে আছে, কোন আয়নাঘরে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয়েছে—আমরা জানি না।’ 

গুমের পারমানেন্ট সংস্কৃতি তৈরি করেছে এই মাফিয়া সরকার—মন্তব্য করে রিজভী আরও বলেন, ‘শুধু নিজের সিংহাসন রক্ষা করার জন্যই আজ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) গুম-খুনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। কারণ, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হচ্ছে শেখ হাসিনার জন্য। এই আতঙ্ক থেকে নিজেকে নিরাপদ করার জন্য জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও গণতন্ত্রকামী নেতাদের তিনি গুম করাচ্ছেন।’ 

কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনি না পরিপত্র জারি করেছিলেন যে, কোটা থাকবে না। আবার আদালত থেকে এটা হলো কেন? আমাদের কাছে তো মনে হয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদালতের যেন একটা টেলিপ্যাথিক সম্পর্ক আছে। অর্থাৎ, শেখ হাসিনা যেটা ভাবেন, আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে সেটা চলে আসে—এটাই তো আমরা দেখছি। সরকার যেটা চায়, সেটা আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে চলে আসে। এই টেলিপ্যাথিক সম্পর্কটা হয় কী করে?’ 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত