আমি প্রেগন্যান্ট, পানি চেয়েও সময় মতো পাইনি: সংবাদ সম্মেলনে মাহি

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ২৩: ২২
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩, ১৮: ০৩

জামিনে মুক্তি পেয়ে গণমাধ্যমকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেছেন, ‘গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশ নানাভাবে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমি প্রেগন্যান্ট বলার পরেও পানি খেতে চাইলে প্রায় এক ঘণ্টা পানি দেয়নি। তবে কারাগারের ভেতরে জেলারসহ অন্যান্যরা খুব মানবিক।’

শনিবার প্রায় ৫ ঘণ্টা কারা ভোগের পর জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মাহির মালিকানাধীন ফারিস্তা রেস্টুরেন্টের সামনে তাৎক্ষণিকভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। 

এ সময় তিনি তাঁর স্বামীর জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন। তবে এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহি ফেসবুক লাইভে পুলিশ কমিশনারের দেড় কোটি টাকার নেওয়ার বিষয়ে সঠিক কোনো ব্যাখা করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘সব সময় সব ঘটনার প্রমাণ থাকে না। এরপর মাহি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়ে লাইভ করার বিষয়টি উচিত হয়নি। দেয়ালের পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণেই এমনটা করেছি।’ 

মাহি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরে গ্রেপ্তারের সময়ের তিনি পুলিশ সদস্যদের জানিয়েছিলেন, যে তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তারপরও পুলিশ সদস্যরা তাকে বলেছেন, এভাবেই যেতে হবে।’ 

পুলিশের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মাহি। বলেন, ‘আমার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, মনে হয়েছে আমি একজন যুদ্ধাপরাধী। আমাকে যখন গ্রেপ্তার করা হলো, আমাকে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আমাকে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন পুলিশ সদস্যরা ওয়্যারলেসেও কথা বলছিল না। আমি কি এত বড় আসামি হয়ে গেছি?’

মাহি বলেন, ‘এই যে আমার সারা দিনের জার্নি, কারাগার পর্যন্ত পৌঁছানো—আমি ভীত। আমি মাহিয়া মাহি, একজন পরিচিত মুখ হওয়ার পর আমাকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। একটা গাড়িতে আমাকে আনা হয়েছে, সেটাতে তীব্র গরম। আমি বারবার বলছিলাম, আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তারা বলছে, এভাবেই যেতে হবে। আমি একটু ঠান্ডা পানি চেয়েছিলাম। কারণ আমি গরমে অনেক তৃষ্ণার্ত ছিলাম, এক বোতল পানি এনে দিতে তারা এক ঘণ্টা নিয়েছে।’

মাহি তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাকে যখন আদালতে নেওয়া হয়েছে। আমি আসলে জানি না...আদালতে ঢোকার পরে বিচারকতো আমাকে ন্যূনতম একটা কথা জিজ্ঞাসা করবেন যে, আমি কেন এটা করেছি বা কিছু একটা। আমার আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা সুযোগতো দেবেন। বিচারক শুধু চেয়ারে বসলেন আর উঠলেন। বিচারককেও কোনো কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। শুধু বলা হলো, মাহিয়া মাহি উপস্থিত হয়েছেন। কোর্ট শুরু করা হলো। আবার সঙ্গে সঙ্গে বলা হলো, মাহিয়া মাহি কারাগারে যাচ্ছেন, কোর্ট মুলতবি ঘোষণা করা হলো। ওনাকে কারাগারে পাঠাও। এটা কী ধরনের বিচার?’ 

মাহিয়া মাহি অভিযোগ করেন, ‘আমি যখন আদালতে ছিলাম, তখন বারবার পুলিশ বলছিল, ওনাকে রিমান্ডে নিতে হবে। আমি একজন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়েছে। আমাকে রিমান্ডে নিয়ে তারা কী বের করবে? এমন পরিস্থিতিতে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে ভীত। আমাকে যেমন মানসিক, শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। যে সে দেশে আসলে তাকেও রিমান্ডে নেওয়া হবে, তাকেও নির্যাতন করা হবে।’

মাহি বলেন, ‘আমি সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে জানাতে চাই। আমি কিন্তু পুলিশ নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আমার সারা জীবনে অনেক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। আমি সামনে থেকে পুলিশ প্রধানকে দেখেছি, বিভিন্ন ফোর্সের প্রধানদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা খুবই নাইস, তারা জানেন মানুষকে কীভাবে রেসপেক্ট করতে হয়, তারা অনেক অনেস্ট। আমি শুধু একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছি, যে মোল্যা নজরুল। আমি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে তার আইনজীবী ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত