টাঙ্গাইলে ছাত্রলীগের সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ঘটনার সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। 

এদিকে ঘাটাইলে পুলিশ বক্স, আওয়ামী লীগ কার্যালয়, উপজেলা পরিষদ গেট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে এই ঘটনা ঘটেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টা থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা প্রেসক্লাবের সামনে কবি নজরুল সড়কে সমবেত হতে থাকেন। সেখানে হাজার হাজার ছাত্রজনতার স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আন্দোলনটি জনস্রোতে পরিণত হয়। এরপর তাঁরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজপথ দখল করে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করতে যান। 

বেলা ১১টার দিকে খবর আসে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শিক্ষার্থীরা পথে হামলার শিকার হচ্ছেন। এরই মধ্যে টাঙ্গাইল শহরের বটতলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আন্দোলনকারীরা খবর পেয়ে বটতলার দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় তারা আকুরটাকুর এলাকায় অবস্থিত বিবেকানন্দ হাইস্কুল এন্ড কলেজে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। 

এর আগে আন্দোলনকারীদের মিছিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা ও গুলি চালায় বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় কয়েকজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একই সময় সিঅ্যান্ডবি সড়কে রাখা চ্যানেল এস এর সাংবাদিকের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। 

এদিকে দুপুরে টাঙ্গাইল-২ (ভুঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্যের টাঙ্গাইল পৌরসভার পূর্ব আদালতপাড়ার বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধরা। এ সময় তারা বাসার সামনে থাকা ৭টি মোটরসাইকেল ও এমপির গাড়ি ভাঙচুর করে। 
এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষে দুজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

এ ছাড়া শহরের সিঅ্যান্ডবি সড়ক ও বটতলা এলাকায় বহুতল ভবন থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে টাঙ্গাইল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 

এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ ও শহরের ভেতরে ছোট যানবাহন সীমিত আকারে চলাচল করছে। কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে দেখা গেছে। 

অন্যদিকে গত শনিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করে মাঠে থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে আওয়ামী লীগের ওই সিদ্ধান্ত পালনে দলের নেতা-কর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি। 

এদিকে জেলার ঘাটাইলের ছাত্রলীগের সঙ্গে এক দফার আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ কলেজ মোড় এলাকায় ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্থান ত্যাগ করে। পরে আন্দোলনকারীরা ঘাটাইলের পুলিশ বক্স, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করে আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’