মাদারীপুরে দেড় শর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিকেই চলছে পাঠদান 

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ২০: ১৯
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ২০: ৩৪

মাদারীপুরে দেড় শর বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে পলেস্তারা খসে পড়ছে, কোথাও ইট-সুরকি পড়ছে; আবার কোনো কোনো বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল ধরেছে। অথচ এসব ভবনেই চলছে পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় ১৭৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কয়েক বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর। অথচ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত বিদ্যালয়গুলোতেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এমনই একটি বিদ্যালয়। প্রায় ছয় বছর আগে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। তবুও ভবন সংকট থাকার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণিকক্ষেই পাঠদান চলছে।

পেয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা চরনাচনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘প্রায় সময় ক্লাস করতে গেলে ছাদ থেকে পলেস্তারা, ইট, সুরকি পড়ে। তাই আমরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করি।’

এ বিষয়ে অভিভাবক আনোয়ার হোসেন, শিউলি বেগম, গোলাম মোস্তফা জানান, ছোট ছেলে-মেয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। যেন দ্রুত এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তাঁরা।

চরনাচনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুবেল হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ এমনকি অফিস কক্ষের অবস্থাও খারাপ। আতঙ্কের মধ্য দিয়েই শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এখানে নতুন ভবন হলে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়বে পাশাপাশি শিক্ষার মানও বাড়বে।’ 

এমন আরেকটি বিদ্যালয় হচ্ছে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের ১৬ নম্বর পশ্চিম পেয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৫৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। পর্যাপ্ত ভবন না থাকায় নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে ছোট শিক্ষার্থীদের।

পেয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা পেয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া আক্তার বলছে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই অনেক কষ্ট করে এক রুমের মধ্যেই দুই শ্রেণির ক্লাস হয়। এতে করে আমাদের সবারই পড়াশোনার সমস্যা হয়।’

পেয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় নানা সমস্যা নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। তা ছাড়া এই সমস্যার জন্য দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় ১৭৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর। ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত এসব ভবনের নামের তালিকাও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। সে ব্যাপারে কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করছি দ্রুত এগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত