এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের খাতা দেখছেন প্রধান পরীক্ষক বাবা

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪, ২৩: ৪২

সন্তান চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও বাবা যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হয়েছেন। এমন অভিযোগ উঠেছে যশোরের চৌগাছার ঝাউতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়নাল হকের বিরুদ্ধে। 

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর পরীক্ষক নিয়োগপত্রে ১১টি শর্ত দিয়ে বলা হয়েছে, শর্তাবলি পালন সাপেক্ষে আপনাকে যশোর বোর্ডের উপর্যুক্ত বিষয় ও পত্রের একজন পরীক্ষক নিয়োগ করা হলো (তবে সন্তান/পোষ্য পরীক্ষার্থী হলে প্রধান পরীক্ষক/পরীক্ষক/নিরীক্ষক হতে পারবেন না এবং এই নিয়োগপত্রটি বাতিল হবে)। ব্রাকেটের ভেতরের অংশটুকু বোল্ড করে লেখা হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আয়নাল হকের ছেলে চৌগাছা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে চৌগাছা ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এরপরও তিনি তথ্য গোপন করে যশোর বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হয়েছেন এবং এরই মধ্যে বোর্ড থেকে খাতাও নিয়ে এসেছেন। 

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বোর্ডের আওতাধীন সকল পরীক্ষক/প্রধান পরীক্ষক/নিরীক্ষকদের নিয়োগপত্র বোর্ডের ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা সেখান থেকে নিয়োগপত্রটি ডাউনলোড করে নিয়োগপত্রের ওপরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককের স্বাক্ষর করে বোর্ডে নিয়ে গিয়ে উত্তরপত্র নিয়ে আসতে হবে।

আয়নাল হক এই সুযোগে নিজের ছেলে পরীক্ষার্থী—বিষয়টি গোপন করে ইংরেজি ১ম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ৪০০ খাতা দেখার জন্য নিয়ে এসেছেন। বিষয়টি নিয়ে চৌগাছার শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর পরীক্ষক নিয়োগপত্র। ছবি: সংগৃহীত জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আয়নাল হক প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করলেও পরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানার পর আজই বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাহেবের পিএকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ইংরেজি প্রথম পত্রের ৪০০ খাতা পেয়েছিলাম। আমি অনুরোধ করেছি অন্য কাউকে খাতা দিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনাদের (সাংবাদিক) কারণে এই খাতা দেখতে পারিনি।’

স্থানীয় এক সাংবাদিকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি যা বলবেন সেটাই করব অর্থাৎ আপনি বললে খাতা দেখব।’ পরে তার অফিশিয়াল বক্তব্য চাইলে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। বিষয়টি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানাব। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই হবে।’

তবে এ বিষয়ে জানতে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদের ফোন নম্বরে একাধিকার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত