সন্তানের দেখভাল ঠিকমতো করছেন না সেই তরুণী, পুনর্বাসন দাবি

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

মেহেরপুরের গাংনীতে সন্তান প্রসবের পর একটু স্বাভাবিক আচরণ করছিলেন বলে জানান বাক্‌প্রতিবন্ধী সেই তরুণীকে আশ্রয়দাতা মোহাসিন আলী ও তাঁর স্ত্রী জোসনা খাতুন। তবে এই তরুণী এখন সন্তানকে ঠিকমতো দেখভাল করছেন না। তিনি নিজের সন্তানের যেকোনো ক্ষতি করতে পারেন বলে মনে করছেন মোহাসিন-জোসনা দম্পতি। তাঁরা প্রশাসনের কাছে বাক্‌প্রতিবন্ধী তরুণীর চিকিৎসা ও তাঁর সন্তানের নিরাপদ অবস্থান চেয়েছেন। 

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রসবের পর সন্তানের প্রতি মমতা জেগেছিল এবং কয়েকটি শব্দও উচ্চারণ করেছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে তত খারাপের দিকে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে মাথার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাওয়ায় তাঁকে ধরে আনতে হচ্ছে। সন্তানের হাত-পা ধরে টানাটানি করছেন। সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। 

বাড়ির মালিক আশ্রয়দাতা মোহাসিন আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ১২ অক্টোবর দেবীপুর বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এই অন্তঃসত্ত্বা পাগলি। তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার পরদিন মেয়ে সন্তান প্রসব করে। পরে সন্তানের প্রতি এক গভীর ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিল। তাঁর মুখ থেকে কয়েকটি শব্দ বলছিল কিন্তু যত দিন যাচ্ছে সে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। সন্তানকে ঠিকমতো দেখছে না। সন্তানের প্রতিও সেই ভালোবাসা নেই। বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে তাঁকে ধরে আনতে হচ্ছে। তাঁকে নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা।’ 

মোহাসিন আলী আরও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত গরিব মানুষ। প্রথম প্রথম প্রশাসনের লোকজন এসেছিল। এখন আর খোঁজ নেন না। অনেক দিন ধরে বলছে নিয়ে যাব কিন্তু নিয়ে যাচ্ছে না। আমি বাইরে কাজেও যেতে পারছি না। তাই প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য এবং মেয়ে সন্তানটিকে নিরাপদ রাখার।’ 

মোহাসিন আলীর স্ত্রী জোসনা খাতুন বলেন, ‘পাগলি সন্তান প্রসবের পর সন্তানের প্রতি মহব্বত থাকলেও এখন আর সেই মহব্বত নেই। সে মাঝেমধ্যে সন্তানের হাত পা ধরে টানাটানি করে। ভয় হয় কখন মেরে ফেলবে বলে। আমরা সব সময় খেয়াল রাখছি এবং সর্বোচ্চ দিয়ে সন্তানকে নিরাপদ রেখেছি। শুনেছি সামাজিক প্রতিবন্ধী আবাসন কেন্দ্র আছে সেখানে নিয়ে যাবে কিন্তু এখনো নিয়ে যায়নি।’ 

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহা. আরশেদ আলী বলেন, ‘নবাগত ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।’ 

গাংনীর ইউএনও প্রীতম সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি, আইনি প্রক্রিয়া চলছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁকে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত