সাতক্ষীরা উপকূলে ঝুঁকিতে ৩৪ কিলোমিটার বাঁধ, মানুষের নির্ঘুম রাত

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৪, ০৯: ২০
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ০৯: ৫১

সাতক্ষীরায় বর্ষা মৌসুম এলেই বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করে নদীপাড়ের মানুষ। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, কোলা, বিছট, বুড়িগোয়ালিনী, হরিনগর, মাদিয়াসহ কমপক্ষে ২০টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় ৬৭৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। ষাটের দশকে এসব বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রিমালে ভেতরে পানি না ঢুকলেও ৩৪ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’ দাবিতে সোচ্চার উপকূলীয় এই জেলার বাসিন্দারা। এ প্রসঙ্গে আশাশুনির তালতলা এলাকার মাসুম বিল্লাহ বলেন, প্রতিবছর কোনো না কোনো দুর্যোগে এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন সময়ে যে বাঁধ দেয়, তা জোড়াতালি দিয়ে চালানো হয়। যা টেকসই হচ্ছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হলে প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই বেড়িবাঁধ এখন সময়ের দাবি।

আশাশুনির বন্যতলা এলাকার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘৪৭-৪৮ বছর বয়স আমার। অথচ আমি দেখছি, খোলপেটুয়া নদীর ওই পাড় ভাঙে আর এই পাড় গড়ে।’
শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর এলাকার রাসেল সরদার বলেন, ‘৩০ বছর ধরে দেখে আসছি, ভাঙন এভাবে চলছে। আমার দাদার কবরও চলে গেছে। বর্ষার সময় ভাঙন বেশি হয়। এখন বর্ষা চলে এসেছে। রাতে ভালো ঘুমও হয় না ভাঙনের ভয়ে।’

একই অবস্থা আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া, চাকলা ও বিছট এলাকায়। কুড়িকাহুনিয়া এলাকার আব্দুর রব বলেন, যেনতেনভাবে প্রতিবছর কিছু কাজ হয়। কিছুদিন যেতে না যেতে জোয়ারের তোড়ে সেই বাঁধ আবার ভেঙে যায়।

এ বিষয়ে জেলা পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, যেনতেনভাবে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা মানে হলো টাকা পানিতে ঢালা। সুতরাং, সেটা না করে উপকূলীয় এলাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। খরচ একটু বেশি হলেও গাবুরার মতো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বাঁধ যেমন শতাধিক বছর টিকবে, অন্যদিকে বাঁধ যোগাযোগব্যবস্থার ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিকল্প নেই। কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই বিকল্প হিসেবে যে বাঁধই করা হোক না কেন, তার উচ্চতা কমপক্ষে ৫ মিটার আর চওড়া ৬ মিটার করার কথা ভাবা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত