পুলিশের ওপর আসামির পরিবারের হামলা, পরদিন গাঁজাসহ গ্রেপ্তার

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২: ০৯
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ০১

বাগেরহাটের শরণখোলায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মাদক মামলার আসামি ইলিয়াস শিকদারকে (৪২) ছিনিয়ে নেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। এ হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজনকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম খোন্তাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন এসআই আব্দুস সালাম, এএসআই শফিকুর রহমান ও কনস্টেবল মো. মিলন। এঁদের মধ্যে এএসআই শফিকুর রহমান ও কনস্টেবল মো. মিলন শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

হামলার ঘটনায় এসআই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ইলিয়াস শিকদার, তাঁর ভাই ফারুক শিকদার, নাছির শিকদার, স্ত্রী রূপালী বেগম, মেয়ে আখিসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে শরণখোলা থানায় মামলা করেছেন। 

এ মামলায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খোন্তাকাটা গ্রামে পুলিশ ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি আবারও পুলিশের ওপর দা নিয়ে চড়াও হন। তবে এ সময় কেউ হতাহত হননি। ইলিয়াসকে তাঁর বাড়ির সামনে থেকে ৫০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া গাঁজার কলকিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। 

এদিকে পুলিশের ওপর হামলার পরও পালিয়ে না যাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ইলিয়াসের পেছনে ক্ষমতাধর কোনো সিন্ডিকেট রয়েছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

মামলার বাদী এসআই আব্দুস সালাম বলেন, ‘গতকাল বুধবার ইলিয়াসকে গাঁজাসহ ধরে ফেললে, সে আমাদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াসের ভাই, মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। ইলিয়াসকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এতে আমরা তিনজন আহত হই।’ 
 
খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইলিয়াস শিকদার দীর্ঘদিন ধরে গাঁজা সেবন ও বিক্রি করে আসছে। আমরা চেষ্টা করছিলাম তাকে পুলিশের মাধ্যমে হাতেনাতে ধরার। পুলিশ হাতেনাতে গাঁজাসহ ধরলে পুলিশের ওপর হামলা করে ইলিয়াস ও তার স্বজনরা। শুধু ইলিয়াস নয়, শরণখোলা উপজেলায় আরও অনেকেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরও বেশি অভিযান চালানোর দাবি জানাচ্ছি।’

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলার পরও ইলিয়াস শিকদার পালায়নি। বরং পরে গ্রেপ্তার করতে গেলে সে দা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে। আমরা ৫০ গ্রাম গাঁজা, দাসহ ইলিয়াস শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছি। ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মাদক মামলায় আরও একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্য হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

ওসি মো. ইকরাম হোসেন আরও বলেন, ‘গতকাল এসআই আব্দুস সালাম, এএসআই শফিকুর রহমান ও কনস্টেবল মো. মিলন ইলিয়াসকে ধরতে তার বাড়ির সামনে যায়। এঁদের মধ্যে এসআই আব্দুস সালাম ছাড়া অন্য দুজন সাদাপোশাকে ছিলেন। তাঁরা ইলিয়াস শিকদারকে গাঁজাসহ ধরে ফেলেন। এ সময় ইলিয়াস পুলিশের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াসের আত্মীয়স্বজনেরা পুলিশের ওপর হামলা করে এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা থানায় ফিরে এসে মামলা করেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত