ঘন কুয়াশায় ধানের চারায় ক্ষতি, ঝরে পড়ছে সরিষা ফুল

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪: ৪৩
Thumbnail image

কয়েক দিনের ঘন কুয়াশায় চুয়াডাঙ্গায় ক্ষতি হচ্ছে ধানের চারার। ঝরে পড়ছে সরিষার ফুল। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে চারপাশ। তীব্র শীতে কৃষক জমিতে কাজ করতে পারছেন না। এতে ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

কৃষকেরা বলছেন, এখন মাঠে ধানের বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। এ ছাড়া আলু, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলও চাষ হচ্ছে। কিন্তু কুয়াশার কারণে এসব ফসলে ক্ষতি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত দুই দিন ১৩ ডিগ্রির ওপরে ছিল।

কৃষকেরা জানান, মাঠজুড়ে এখন রবিশস্য। সরিষা, আলু থেকে শুরু করে একাধিক রবি ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। অনেক ফসল ঘরে তোলার সময়ও হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে হিম বাতাস ও ঘন কুয়াশায় দাপট দেখাচ্ছে শীত।

এদিকে দিনের বেলায় সূর্যের দেখা মিলছে, উষ্ণতাও ছড়াচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তীব্র কুয়াশা পড়ছে। নিয়মিত ঘন কুয়াশায় অনেক ফসলেই বেড়েছে রোগবালাইসহ নানা সমস্যা। ফসল চাষে সফলতা পেতে এ সময় সঠিক যত্ন নিতে বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

কৃষি বিভাগ বলছে, কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলদে হয়ে যেতে পারে। সরিষায় বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। আলুর পাতায় মড়ক লাগার সম্ভাবনা আছে। এসব বিষয়ে সমাধান পেতে নিকটস্থ কৃষি কার্যালয়ে যোগাযোগ করে সমাধান নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আমির আলী বলেন, ‘রাতে ফসলে কুয়াশা পড়ে। ভোরে মাঠে গিয়ে সেই সব কুয়াশা সরিয়ে দিতে হয়। আবার আলুর খেতে পলিথিন দিয়ে কুয়াশা রোধ করতে হচ্ছে। এর জন্য উৎপাদন খরচ বাড়ছে।’ 

সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের চাষি তোতা মিয়া বলেন, ‘শীতের এই সময়ে কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলায় লালচে রং হয়ে যায়। আমরা নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করে বীজতলা কুয়াশা থেকে ভালো রাখার চেষ্টা করছি।’ 

দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা গ্রামের আলুচাষি মিলন মিয়া বলেন, ‘কদিন ধরে শীত আর কুয়াশার কারণে আলুর চারাগুলো লাল হয়ে গেছে। এবার উৎপাদন খরচ আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছি।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গায় কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। এ জন্য তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আছে। এই কুয়াশা কেটে গেলে শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গায় তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। আমরা ফসলের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। বীজতলার ক্ষেত্রে আমরা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। অনেক কৃষকই ফসলের যত্ন নিতে আমাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন।

বিভাস চন্দ্র সাহা আরও বলেন, রবি ফসলের ভালো ফলন পেতে মাঠে থাকা শাক-সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি—এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত