খুলনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে একটি মহল। আজ সোমবার মহানগরীর শিপইয়ার্ড সড়কে এ জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে বাধার মুখে পড়ে কর্তৃপক্ষ। এ সময় হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে কাঠ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বাধা-হামলার মুখে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করে সংস্থাটি।

এর আগে, গতকাল রোববার সকালে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে রূপসা স্ট্যান্ড রোডে মানববন্ধনের আয়োজন করেন এবং সড়কে কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন। মানববন্ধন কর্মসূচিতে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সেলিম কাজী সভাপতিত্ব করেন।

এতে বক্তারা বলেন, রূপসা নদীর পশ্চিম পাড়ে অনেক বছর ধরে কাঠ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে আসছেন। যার সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ জড়িত। হঠাৎ ব্যবসা তুলে দেওয়া হলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিক, কর্মচারীরা পরিবার-পরিজনসহ অসহায় হয়ে পড়বেন।

এদিকে বেলা ১১টার আগে সেখানে বিআইডব্লিউটিএর ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আক্তারের নেতৃত্বে এক্সকাভেটর দিয়ে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিলে শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁদের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় চারজন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ ৫০-৬০ বছর ধরে তাঁরা পশ্চিম রূপসা নদীর তীরে কাঠের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এই ব্যবসার সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। আগে কয়েকবার ব্যবসার স্থান বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা আবেদন করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁদের আবেদনে কোনো সাড়া দেয়নি। হঠাৎ টিটু নামের একটি ব্যক্তিকে লিজ দেওয়া হয়েছে ওই জায়গা। এ কারণে তাঁদের উচ্ছেদ করার জন্য চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নোটিশ দেয়।

ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, সরকার যদি উন্নয়নকাজে জায়গা চায়, সে ক্ষেত্রে ছেড়ে দিতে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো ব্যক্তিকে লিজ দিলে তাঁরা মানতে রাজি নন।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপপরিচালক মো. মোন্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী সেখানে অভিযান চালাতে যাই। কিন্তু অবৈধ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ছাড়া তিনিসহ চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মেরে আহত করেন। এ বিষয়ে মামলা করা হবে।’

জানতে চাইলে খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন খান বলেন, কাঠ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা বাধা দেওয়ার একপর্যায়ে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে অতিরিক্ত ফোর্স এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।