মাদককাণ্ডে আলোচিত সেই ছাত্রলীগনেতার ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চাকরি’

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩, ০৯: ৪৭
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৩, ১০: ৫৫

ছাত্রাবাসে মাদকের বিস্তার, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলহাজ মিয়া দলীয় পদের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির আবেদন করেছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তাঁর চাকরি হওয়ার সুবাদে তিনি এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবেদনের একটি ছবি আলহাজ মিয়া তাঁর ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। এর আগে আলহাজ মিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনের অনুলিপি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগ বরাবর পাঠানো হয়েছে।

দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বী।

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আলহাজ মিয়ার চাকরি হয়েছে। চাকরিজনিত কারণ দেখিয়ে তিনি দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। আমরা সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেব। এ ছাড়া স্বেচ্ছায় দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির আবেদন করায় আলহাজ মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে আপাতত অগ্রসর হচ্ছি না।’

ছাত্রলীগ নেতা মো. আলহাজ মিয়া স্বাক্ষরিত লিখিত ওই আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইসলামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। গত ১৬ জুলাই থেকে চাকরিজনিত কারণে সাধারণ সম্পাদক পদ হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতিপত্র প্রদান করলাম।’ 

আলহাজ মিয়া আরও উল্লেখ করেন, ‘আমার অব্যাহতিপত্র গ্রহণ করে আমাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানে করতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।’

উল্লেখ্য, গত ২ জুন গভীর রাতে থানার পুলিশ ও জামালপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের যৌথ অভিযানে ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রাবাস থেকে একটি মোটরসাইকেল, মাদক গ্রহণের সরঞ্জাম, সাতটি মদের খালি বোতল এবং টবের মধ্যে রোপণকৃত একটি গাঁজার গাছ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে জামালপুর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ইসলামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা আলহাজ মিয়া জড়িত থাকাসহ তাঁর রোষানল থেকে মুক্তি চেয়ে দায়েমূল ইসলাম জীবন মিয়া ও রিদোয়ান আল রাফি নামে আইএইচটির দুই শিক্ষার্থী গত ৪ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ, জেলা ছাত্রলীগ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন। তবে শুরু থেকেই আনীত অভিযোগ ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে দাবি করে আসছেন অভিযুক্ত আলহাজ মিয়া। 

ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আলহাজ মিয়ার সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে গত ৬ জুন রাতে দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভা ডেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির অনুমোদন করেন। এ ছাড়া জেলা ছাত্রলীগও তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তবে এখনো কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। ফলে আলহাজ মিয়া মাদককাণ্ডে জড়িত না নির্দোষ, তা অজানাই রয়ে গেছে। আর নানাবিধ অভিযোগের বোঝা মাথায় নিয়েই রাজনীতি ছেড়ে চাকরি জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন আলহাজ মিয়া।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত