উদ্বোধনের দুই বছরেও চালু হয়নি মুক্তিযোদ্ধা ভবন, বসছে সবজির বাজার

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ২৩: ১১

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর হলেও চালু হয়নি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। ওই অবস্থায় ভবনটির সামনের অংশটিকে প্রস্রাবখানা হিসেবে ব্যবহার করছেন স্থানীয় লোকজন। শুধু তাই নয়, ভবনটি ঘেঁষে প্রতিনিয়ত শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্য নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এরপর শাক-সবজির উচ্ছিষ্ট অংশ এবং ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভবনের সামনের আশেপাশের অংশকে ডাস্টবিনে পরিণত করে রেখেছে। এ অবস্থায় একদিকে ময়লা-আবর্জনার পচা দুর্গন্ধ, অন্যদিকে প্রস্রাবের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীসহ আশেপাশের ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধা ভবনটির অবস্থান। উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও ভবনটি চালু না হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবহেলা অযত্নে পড়ে আছে ভবনটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভবনটিতে ১২টি দোকানঘর রয়েছে। তারমধ্যে স্থানীয়দের জন্য ৬টি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৬টি। লটারির মাধ্যমে স্থানীয়দের ৬টি দোকানঘর বরাদ্দ হলেও স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক আবেদনের কারণে বাকি ৬টি এখনো পর্যন্ত বরাদ্দ হয়নি। যে কারণে উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর পরও চালু হয়নি ভবনটি।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ঈশ্বরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। ৫ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ভবন নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাল্টিপ্লেক্স হৃদয় জেভি নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের জুলাই মাসে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চে।

ওই অবস্থায় ২০২২ সালে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। এরপর ওই বছরেরই (১৯ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়ালি ভবনটির উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাড. আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি।

ভবনটির আশেপাশে স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কে শুনে কার কথা! দিন-রাত মানুষে এখানে প্রস্রাব করে পরিবেশ নোংরা করে ফেলছে, অথচ বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরেই আসছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘আমি প্রায় সময় দেখি লোকজন মুক্তিযোদ্ধা ভবনটির সামনের অংশে বসে প্রস্রাব করছে। সম্প্রতি একজনকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘‘সবাই তো করে, আমি করলে দোষ কি?’’ প্রশাসনের উচিৎ এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা।’’’

বেশ কয়েকজন পথচারী বলেন, প্রস্রাবের দুর্গন্ধে এদিক দিয়ে আসা-যাওয়া করাই দায় হয়ে গেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ হলুদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ভবনটি যেহেতু চালু হয়নি, তাই লোকজন সেখানে বসে প্রস্রাব করে। ভবনটি চালু হলে, রক্ষণাবেক্ষণ করলে পরিবেশ সুন্দর হয়ে যাবে।’

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর হলেও চালু হয়নি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। ওই অবস্থায় ভবনটির সামনের অংশটিকে প্রস্রাবখানা হিসেবে ব্যবহার করছেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: আজকের পত্রিকাউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, ‘আমি এখানে সম্প্রতি যোগদান করেছি। কি কারণে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি এখনো চালু হয়নি এ বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি বিষয়টি জেনে ভবনটি চালু হওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি অচিরেই ভবনটি সরেজিমনে পরিদর্শন করব এবং তা সুন্দর রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত