Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে বিদ্যুতের বকেয়া ৩৩ কোটি টাকা, পিডিবির ‘লোকদেখানো’ অভিযান

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০: ৫০
কিশোরগঞ্জে বিদ্যুতের বকেয়া ৩৩ কোটি টাকা, পিডিবির ‘লোকদেখানো’ অভিযান

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কিশোরগঞ্জের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দেখলে যে কারও চোখ চড়ক গাছ হয়ে যেতে পারে। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার ও সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩৩ কোটি টাকা পায় পিডিবি।

অভিযোগ রয়েছে, পিডিবি অফিসের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেদের যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হতে সরকারের কোটি কোটি টাকা বকেয়া ফেলে রাখছেন। অন্যদিকে ছোট ব্যবসায়ী ও কলকারখানা মালিকের কাছ থেকে সুবিধা না পেলে এক মাসের বিল বকেয়া হলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

অথচ গত বছরের ১ জুন একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাহক বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংযোগ কেটে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশের পরও কিশোরগঞ্জে বিপুল অঙ্কের টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে।

অভিযোগ রয়েছে, পিডিবি অফিসের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেদের যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হতে সরকারের কোটি কোটি টাকা বকেয়া ফেলে রাখছেন। অন্যদিকে ছোট ব্যবসায়ী ও কলকারখানা মালিকের কাছ থেকে সুবিধা না পেলে এক মাসের বিল বকেয়া হলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ভূপেন্দ্র চন্দ্র ভৌমিক দোলন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাঝে মধ্যে পিডিবি কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে ‘লোকদেখানো’ অভিযান চালালেও অধরা থেকে যায় মোটা অঙ্কের বিলধারীরা। 

‘এর কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন, এই অভিযান দিয়েই তাদের অবৈধ আয়ের পথ সৃষ্টি করা হয়। এমনকি লং সার্ভিস দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ যদি বন্ধ করা গেলে এই সমস্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।’

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জে পিডিবির মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৬৮ হাজার। এর মধ্যে প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকের সংখ্যা ২ হাজার ৫৪৫। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত ৭০০ মামলা চলছে। এসব মামলার কারণে গ্রাহকের প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। 

এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ পৌরসভার বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বকেয়া ৮৪ লাখ টাকা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ৯ লাখ টাকা, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বকেয়া ১০ লাখ টাকা, জেলা কারাগারের বকেয়া ১৭ লাখ টাকা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১১ লাখ টাকা, জেলা শিল্পকলা একাডেমির বকেয়া ২১ লাখ টাকা, কিশোরগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ৯ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বকেয়া ১ লাখ টাকা, কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের বকেয়া ১১ লাখ টাকা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বকেয়া ৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া রয়েছে ২০ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী এসব প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, নিয়ম মেনে সরকারি বরাদ্দের টাকা থেকে সমন্বয় করে আগের বকেয়া কিছু করে পরিশোধ করা হচ্ছে। আর পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ২ কোটি টাকার ওপরে ভৌতিক বিল দিয়েছে পিডিবি, এগুলো সংশোধন হলেই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ২ কোটি টাকার ওপরে ভৌতিক বিল দিয়েছে পিডিবি। আমরা পিডিবিকে এই বিল সংশোধনের চিঠি দিয়েছি। এটা সমাধান হলে এক টাকাও বকেয়া থাকবে না।’

পিডিবি কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাহ উদ্দীন বলেন, ‘বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্য প্রতি মাসে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিল পৌঁছানো হচ্ছে। সময়ে সময়ে নোটিশ দিচ্ছি এবং মোবাইলে যোগাযোগ করছি। আশা করছি, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল সবাই পরিশোধ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত