দুই স্কুল থেকেই অন্তত ২০ বালক–বালিকার বিয়ে

প্রতিনিধি, মোহনপুর (রাজশাহী)
Thumbnail image

কোভিড মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। লেখাপড়া শিকেয় উঠেছে। অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে, তবে প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সহজলভ্য ও সুলভ না হওয়ার কারণে সে উদ্যোগ খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না। অনলাইন ক্লাসের উদ্যোগ যে প্রত্যন্ত গ্রামে খুব একটা কাজে আসছে তার প্রমাণ গত এক বছরে বাল্যবিয়ের চিত্র।

রাজশাহীর মোহনপুরে করোনার মধ্যে অস্বাভাবিক রকম বেড়েছে বিয়ে এবং বাল্যিয়ের প্রবণতা। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিনের লকডাউনে স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকার কারণে ছেলে–মেয়েরা বাড়িতে বসে আর পড়াশোনা করতে চায় না। তারা বেপরোয়া ভাবে আড্ডাবাজি করে দিনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। অনেকে আবার প্রেমের টানে নিজেরাই বিয়ে করে ফেলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহামারিকালে পরিবারের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে বৃদ্ধির পাশাপাশি গোপনে বিয়ের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। এমনকি কোথাও কোথাও পালিয়ে বিয়ের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক মাসের মধ্যে উপজেলার কেশরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে আবার তিন জনের বাড়ি একই গ্রামে। তারা হলো– কবিতা, মোহননা ও মাহমুদা। এছাড়া গত ৩০ জুলাই রাতে ওই গ্রামেরই আরেক শিক্ষার্থী রেশমা বিয়ে করে ফেলেছে পরিবারকে না জানিয়ে।

কেশরহাট টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী তিলাহারি গ্রামের আয়নালের ছেলে মিলন ও টুটুল, হরিদাগাছি গ্রামের দুলালের ছেলে সাহিনুর রহমানসহ আরও কয়েকজ শিক্ষার্থী লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিয়ে করে ফেলেছে।

জানতে চাইলে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করে আসছে। তবে করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকার কারণে অনেক ছেলে–মেয়ে লেখাপড়ার দিকে আর নজর দিচ্ছে না। তারা বাড়িতে বসে লেখাপড়ার চর্চাটুকুও হয়তো করছে না। অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে। এর পেছনে পরিবারের অবহেলাও থাকতে পারে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, খোঁজ পেয়েছি, আমার বিদ্যালয়ের ১৩–১৫ জন শিক্ষার্থী বিয়ে করে ফেলেছে। আসলে পারিবারিক সচেতনতা জরুরি। দ্রুত এ সমস্যা কাটিয়ে উঠুক এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।

তবে এ বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তাই জবাব দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত