রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে দেড় যুগে বন্ধ হয়ে গেছে ২৩টি ট্রেন। ২০০৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বেশির ভাগ ট্রেন বন্ধ হয়েছে কোচ, ইঞ্জিন ও জনবলসংকটের কারণে। ২৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আউয়াল এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন। রেলওয়ের পরিচালকের (পরিবহন) কাছে প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রথমে ২০০৬ সালের ১২ মে কোচ, ইঞ্জিন ও জনবলসংকটে লালমনিরহাট-বুড়িমারী-লালমনিরহাট রুটের মিশ্র ৪৫১/৪৫২ লোকাল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। আর সর্বশেষ ১৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রুটের সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস বন্ধ হয় সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর পার্বতীপুর-পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটের একটি এবং লালমনিরহাট-পার্বতীপুর রুটের একটি লোকাল ট্রেন বন্ধ করা হয় কোচ, ইঞ্জিন ও জনবলসংকটে। একই কারণে ২০১০ সালের ১৬ মে বন্ধ হয় লালমনিরহাট-পার্বতীপুর এবং লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটের আরও দুটি লোকাল ট্রেন। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ পার্বতীপুর-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটের একটি ও ২০১১ সালের ১ জুলাই লালমনিরহাট-পার্বতীপুর রুটের আরও দুটি লোকাল ট্রেন বন্ধ হয় একই কারণে।

ইঞ্জিন, কোচ ও জনবলসংকটে সর্বোচ্চ আটটি ট্রেন বন্ধ হয়েছে ২০১২ সালে। ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর লালমনিরহাট-সান্তাহার, গোয়ালন্দঘাট-রাজবাড়ী, রাজবাড়ী-ঈশ্বরদী, পার্বতীপুর- চিলাহাটি, পার্বতীপুর-ঈশ্বরদী ও ঈশ্বরদী-রাজবাড়ী রুটের একটি করে ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের ২৪ মার্চ পার্বতীপুর-রমনাবাজার -তিস্তা-রমনাবাজার-পার্বতীপুর রুটের একটি লোকাল এবং পার্বতীপুর-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটের পঞ্চগড় কমিউটার ট্রেন দুটি বন্ধ হয় মেরামতের জন্য। তারপর আর এই ট্রেন দুটি চালু হয়নি।

উত্তরবঙ্গ মেইল ট্রেনটি বন্ধ হয় ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট। সান্তাহার-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটে চলাচল করত এটি।মেরামতের জন্য ২০২৩ সালের ১৮ জুন বন্ধ হয় লালমনিরহাট-পার্বতীপুর রুটের রংপুর কমিউটার। ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর নাশকতা এড়াতে ঈশ্বরদী-রাজশাহী-ঈশ্বরদী রুটের একটি লোকাল এবং আয় কম হওয়ার কারণে ২২ ডিসেম্বর পার্বতীপুর-রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটের উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ হয়। আয় কম হওয়ার কারণে চলতি বছরের ১৩ আগস্ট বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজবাড়ী-ঢাকা-রাজবাড়ী রুটের ভাঙ্গা কমিউটার ট্রেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘বেশ কিছু লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়েছে ঠিক, তবে কিছু আন্তনগর বা অন্য ট্রেন চালুও হয়েছে নতুন করে। আমরা যাত্রীসেবার মান বাড়াতে আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করেছি।

এ জন্যই নতুন ট্রেন চালু হওয়া কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেনের প্রতিবেদন করছি। আমরা এখন যাত্রীসেবা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। এ জন্য স্টেশনগুলোতে নানা সুবিধা তৈরিসহ আধুনিকায়নের কাজ চলছে। টিকিটিং সিস্টেমটা নিয়ে কাজ চলছে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় যেন না হয়, সে বিষয়েও নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।’