রাজশাহীতে ভল্ট ভেঙে প্রায় ৮ কোটি টাকার হেরোইন জব্দ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ১৬: ১৭

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এক বাড়িতে হেরোইন লুকিয়ে রাখা একটি ভল্টের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় এই ভল্ট ভেঙে সাত কেজি হেরোইন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ভল্টের বাইরে বাড়িতে পাওয়া গেছে আরও ৫০০ গ্রাম হেরোইন। 

আজ সোমবার ভোরে গোদাগাড়ী থানা-পুলিশ উপজেলার আঁচুয়া কসাইপাড়া গ্রামে জিয়ারুল ইসলামের (৩৫) বাড়িতে এ অভিযান চালায়। জিয়ারুল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। চার বছর আগে তার নামে একটি মাদক মামলা হয়েছিল। এরপর তিনি মাদক ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে চুপিসারে কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। 
 
রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্ত দিয়েই দেশে সবচেয়ে বেশি হেরোইন ঢোকে। তবে এর আগে একসঙ্গে এত বেশি পরিমাণ হেরোইন পাওয়া যায়নি। অভিযানকালে পুলিশ জিয়ারুলের বাড়ি থেকে ১৮ বোতল ফেনসিডিল, হেরোইন বিক্রির নগদ ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকারও জব্দ করা হয়েছে। এগুলোও ছিল ভল্টের ভেতরে। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার করা হেরোইনের আনুমানিক মূল্য ৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। 

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে হেরোইন ও টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া জিয়ারুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকাএ অভিযানের পর সোমবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘জিয়ারুল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি তার বাসায় মাদকের বড় চালান আছে। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৫০০ গ্রাম হেরোইন পাই। এরপর আরও তল্লাশি চালালে তার বাসায় স্টিলের তৈরি একটি ভল্ট দেখতে পাই।’ 

চাবি চাইলে জিয়ারুল জানান, এটা অনেক পুরোনো ভল্ট। এর চাবি নেই, ভল্ট খোলাও হয় না। কিন্তু জিয়ারুলের বাড়িতে আরও হেরোইন থাকার খবর আমাদের কাছে ছিল। তাই ভল্ট ভাঙার জন্য আমরা ফায়ার সার্ভিসকে আমরা ডেকে পাঠাই। এরপর দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর স্টিলের ভল্ট ভাঙতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট। সেই ভল্ট থেকেই হেরোইন, টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল স্বীকার করেছেন যে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে জড়িত। হেরোইনের চালান ভারত থেকে আসার পর এই ভল্টেই রাখা হতো। তারপর অল্প অল্প করে বিক্রি করা হতো। জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল এলাকার কিছু প্রভাবশালী মানুষের নাম জানিয়েছেন। তারাও নাকি এই হেরোইন সিন্ডিকেটের সদস্য। আমরা এই তথ্যগুলো সেগুলো খতিয়ে দেখব। জিয়ারুলের কথা সত্য হলে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’

পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় জিয়ারুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। জিয়ারুল যে সিন্ডিকেটের সদস্য, সেই সিন্ডিকেটের সদস্যদের এই মামলায় পরবর্তীতে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত