গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীকে অফিস কক্ষে ঢুকে মারধরের অভিযোগ

প্রতিনিধি, পাবনা
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩: ৫৫

পাবনায় গণপূর্ত বিভাগে ঠিকাদারদের অস্ত্রের মহড়ার পর এবার কার্যালয়ে ঢুকে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার দুপুরে গণপূর্ত ভবনে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই প্রকৌশলী। 

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

অভিযোগে জানা গেছে, পাবনা পৌর এলাকার চক ছাতিয়ানী মহল্লার প্রভাবশালী ঠিকাদার মেসার্স নুর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মোকছেদুল আলম নয়ন গণপূর্ত বিভাগের বেশ কিছু কাজ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাঁকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি তা আমলে নেননি। আজ সোমবার এ বিষয় নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে কথা বলতে আসেন ঠিকাদার নয়ন। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী কক্ষে ছিলেন না। উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার তাঁকে অসমাপ্ত কাজগুলো তুলে দেওয়ার জন্য বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি ধাক্কা দিয়ে প্রকৌশলী সাত্তারকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করেন। প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারের চিৎকারে অফিসের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। 

ঘটনার বিষয়ে প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার বলেন, 'নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে ঠিকাদার নয়নকে তাঁর অসমাপ্ত কিছু কাজ নিয়মমাফিক শেষ করতে বলি। এ সময় হঠাৎ তিনি উত্তেজিত হয়ে গালাগাল শুরু করেন। আমি প্রতিবাদ জানালে মারপিট শুরু করেন। নিজেদের অফিসে এমন অপমানিত হবো, কখনো কল্পনাও করিনি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।' 

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা বলেন, 'এর আগেও ঠিকাদাররা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে শাসিয়েছে। ঠিকাদাররা কাজ নেবেন। কাজ না করলে বললেই যদি আমাদের অপরাধ হয় তাহলে বলার কিছুই থাকে না। এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি।' 

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, 'অনেক ঠিকাদারের সঙ্গেই আমাদের কথা-কাটাকাটি হয়। তাই বলে মারধর করবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। আব্দুস সাত্তারকে মারপিটের ঘটনায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।' 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঠিকাদার মোখছেদুল আলম নয়নের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। এমনকি শহরের ছাতিয়ানি এলাকায় তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, 'ভুক্তভোগী প্রকৌশলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। গণপূর্ত বিভাগ চাইলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।' 

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৬ জুন ঠিকাদারি কাজের অজুহাতে আওয়ামী লীগ নেতা এ আর খান মামুন ও যুবলীগ নেতা শেখ লালু তাঁদের বাহিনী নিয়ে অস্ত্রের মহড়া দেয়। ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তিন মাসের মাথায় আবারও এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত